সানিয়া মির্জার হৃদয়স্পর্শী বার্তা নাড়া দিল বিবেকবানদের হৃদয়ে

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার পুলওয়ামায় জম্মু–কাশ্মীর হাইওয়েতে ৭৮টি সিআরপিএফ জওয়ানদের কনভয়ে হামলা চালানো হয়। যেখানে শহিদ হয়েছেন ৪২ জন জওয়ান। এদিকে পুলওয়ামায় হওয়া ‘সিআরপিএফ’ জওয়ানদের উপর হামলা মেনে নিতে পারেননি সানিয়া মির্জা। তিনি তার সেই মনের অনুভূতি এক হৃদয়স্পর্শী বার্তার মাধ্যমে প্রকাশ করেন লেখেন টুইটারে।

তাছাড়া তিনি ১৪ ফেব্রুয়ারিকে প্রেম দিবসের বদলে ভারতের কালো দিবস হিসেবে পালন করার আহ্বান জানান। আর এমন লেখার পরেও ভারতীয় উগ্রবাদীদের ধারা তিনি ট্রোলের শিকার হন তিনি। যার প্রভাবে বরাবরই বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় তাকে। তবে বিবেকবানদের কাছে বেশ সুনাম কুঁড়িয়েছেন তিনি।

এদিকে নিহত জওয়ানদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সানিয়া তার টুইটারে জওয়ানের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে দীর্ঘ একটি লেখা লেখেন। সেখানে সানিয়া বলেছেন, ‘‌১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে কালা দিবস হিসেবে পালন করুক ভারত।’

তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘‌আমি সিআরপিএফ জওয়ান এবং তাঁদের পরিবারের পাশে রয়েছি। ওই সব পরিবারের জন্য আমার হৃদয় কাঁদছে। তারাই প্রকৃত হিরো, যাঁরা আমাদের দেশকে রক্ষা করেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতে কালা দিবস। আমি আশা করব, আর কখনও এমন দিন যেন দেখতে না হয়। কোনও শ্রদ্ধার্ঘ্যই এই পরিস্থিতির জন্য যথেষ্ট নয়।’

তিনি আর লেখেন, ‘এই পোস্ট তাদের জন্য যারা মনে করেন, ‘সেলিব্রিটি’ হওয়ার জন্য আমাদের কোনও হামলাকে ‘নিন্দা’ করতে হবে, টুইটার এবং ইন্সটাগ্রাম হল সোশ্যাল মিডিয়ার সেই মাধ্যম, যাতে প্রমাণ করতে হবে, আমরা কত বড় দেশপ্রেমিক। কিন্তু কেন? কারণ, আমরা সেলিব্রিটি এবং তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ এতটাই হতাশ যে, আমাদের উপর আক্রমণ করে তোমাদের হতাশা মেটাতে চাও। এবং আরও ঘৃণা ছড়াতে চাও, তাই তো?’

এর পর লিখছেন, ‘জনসমক্ষে কোনও আক্রমণকে নিন্দা করার দরকার নেই আমার। নিজের বাড়ি ছাদে দাঁড়িয়ে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় আত্মঘোষণা করে এই হামলার নিন্দা করে দেশপ্রেমিক হতে চাই না। সত্যিই আমরা যে কোনও নিন্দনীয় কার্যকলাপের বিপক্ষে এবং যারা এটা ছড়ায়, আমরা তাদেরও বিরোধী।’

এদিকে সানিয়ার মির্জার পরবর্তী বক্তব্য, ‘‌আমি আমার দেশের জন্য খেলি, ঘাম ঝরাই, এ ভাবেই আমি দেশকে সেবা করি। আমি সিআরপিএফ জওয়ান এবং তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়াচ্ছি। ওরাই প্রকৃত হিরো। এই দিনটা ভোলা যাবে না। ভোলা উচিত নয়। তবে, এর পরও আমি আরও হিংসা না ছড়িয়ে শান্তির কথা বলব। আগ্রাসন ততক্ষণ ভালো, যতক্ষণ তা কোনও সদর্থক বিষয়ে কাজে লাগে। ট্রোল করে কোনও কিছু অর্জন করা যায় না। আমি আবারও বলছি, আমি বিশ্বাস করি, বিশ্বে সন্ত্রাসবাদের কোনও স্থান নেই।’

তিনি আরও লেখেন, ‘‌বসে বসে কোনও সেলিব্রিটি কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে ক’‌টা পোস্ট করল, তার হিসেব না করে নিজের মতো করে দেশের সেবা করুন। আপনি আপনার কাজ করুন। আমরা আমাদের কাজ করছি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা না করে। শান্তির জন্য প্রার্থনা করছি।’