হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান দেখতে এসে আটক ৫ শিশু

গতকাল শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান দেখতে এসে আটক হয়েছে ৫ শিশু। এরা হল সোহান, বড় ইমন, সাইফুল, ইমন ও শামীম। এদের বাসা রাজধানীর খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ এলাকায়। তাছাড়া তারা একে অপরের বন্ধু।

এদিকে জানা যায়, সোহানের গ্রামের বাড়ি শরিয়তপুর। সে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। বড় ইমনের বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি সেও তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। সাইফুলের মাদারীপুরের বাজিতপুর সে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। ছোট ইমনের বাড়ি রংপুর ও শামীমের বাড়ি কুমিল্লায়। তারা দুজনেই কেজিতে পড়ে। এদের সবার বয়স ১০ বছরের নিচে।

জানা যায়, এই ৫ বন্ধু সকালে ঘুম থেকে উঠে স্কুলে যাওয়া, বিকেলে একসাথে খেলাধুলা করা। সবই চলে একসাথে। হঠাৎ একজনের ইচ্ছে হলো বিমান দেখার। যে কথা সেই কাজ। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দূরন্ত এই ৫ বন্ধুর বিমান দেখতে আসা। অতপর এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের (এপিবিএন) হাতে আটক হওয়া।

এ সময় জানতে চাওয়া হয় বিমানবন্দরে কিভাবে এলে, এমন প্রশ্নের জবাবে সোহান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা সবাই বন্ধু। একজনের কিছু হলে অন্যজন থাকতে পারি না। হঠাৎ বড় ইমনের ইচ্ছা হলো বিমান দেখবে। সবাই মিলে বিকেলের ট্রেনের ছাঁদে করে বিমানবন্দর রেলস্টেশনে আসি। এরপর বিমানবন্দরের দেয়াল টপকিয়ে আমি ও বড় ইমন বিমান দেখার চেষ্টা করি। তখন আঙ্কেলরা আমাদেরকে ধরে।’

বড় হয়ে কি হতে চাও এমন প্রশ্ন করতেই সোহান বলে, ‘আমি বিমান চালাব। পড়ালেখা শিখে বিমান চালাতে চাই। কিভাবে উড়ে আবার নিচে এসে পড়ে। অনেক ভালো লাগে দেখতে। আমার বাবা রিকশা চালায়। এরপরও আমি বড় হয়ে বিমান চালাব।’

এ সময় পাশ থেকে বড় ইমন বলে উঠে আমি পুলিশ অফিসার হবো। বাসায় গিয়ে আব্বাকে বলব আমি পড়ালেখা শেষ করে পুলিশ হয়ে বিমানবন্দরে কাজ করব। বড় ইমনের বাবা খিলগাঁওতে মাছ বিক্রি করেন।

এ ব্যাপারে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপস অ্যান্ড মিডিয়া) আলমগীর হোসেন শিমুল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেলে বাইরে থেকে অনেকেই আসেন শাহজালালে বিমান দেখতে। এরাও হয়তো তাদের মতো এসেছিলো। কিন্তু সোহান ও বড় ইমন অতি উৎসাহ নিয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের সীমানা প্রাচীর টপকিয়ে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। তখন দায়িত্বরত আর্মড পুলিশ সদস্যরা তাদেরকে আটক করে।’

এরপর এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপস অ্যান্ড মিডিয়া) আলমগীর হোসেন শিমুল গণমাধ্যমকে আরও বলেন, ‘এখন খিলগাঁও থানায় যোগাযোগ করে শিশুদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের চেষ্টা চলছে।