৩০ জন গডফাদারসহ আত্মসমর্পণ করছেন ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী

আজ ১৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দোষ স্বীকার করে কক্সবাজারের টেকনাফের ১০২ জন ইয়াবা গডফাদার ও ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করছেন। এর মধ্যে ৩০ জন গডফাদার ও ৭২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী রয়েছেন।

এ ব্যাপারে পুলিশ জানায়, কক্সবাজার-টেকনাফ আরকান সড়ক যোগে তিনটি বাসে করে ‘সেফহোম’ থেকে টেকনাফে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের মঞ্চে তোলার জন্য ইয়াবা কারবারিদের বিদ্যালয় ভবনের দোতলা কক্ষে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে বের করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে প্রতীকীভাবে ইয়াবা ট্যাবলট ও অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করানো হবে উখিয়া-টেকনাফের ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে। তাদের মধ্যে ৩০ জন গডফাদার।

এদিকে এখন পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করতে যাওয়া যেসব ইয়াবা ব্যবসায়ীদের নাম জানা গেছে তারা হলেন- সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির ভাই আব্দুর শুক্কুর, শফিকুল ইসলাম শফিক, আমিনুর রহমান প্রকাশ আব্দুল আমিন, ফয়সাল রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য বদির ভাগিনা সাহেদ রহমান নিপু, আরেক ভাগিনা টেকনাফ পৌর কাউন্সিলার নূরল বশর প্রকাশ নূরশাদ, বদির খালাতো ভাই মং সিং থেইন প্রকাশ মমসি, ফুপাতো ভাইয়ের ছেলে কামরুল হাসান রাশেল।

তাছাড়া বদির ভাই শুক্কুরের ম্যানেজার মারুফ বিন খলিল বাবু, বদির বেয়াই সাহেদ কামাল। টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলমের ছেলে দিদার মিয়া, টেকনাফের হ্নীলার নুরুল হুদা মেম্বার, টেকনাফের এনামুল হক এনাম মেম্বার, সাবরাংয়ের মোয়াজ্জেম হোসেন দানু মেম্বার, হ্নীলার জামাল মেম্বার, শাহাপরীরদ্বীপের রেজাউল করিম রেজু মেম্বার, উত্তর আলী খালির শাহ আজম ও সাবারং নয়াপাড়ার আলমগীর ফয়সাল লিটন।

এদিকে ইয়াবা ডন হাজী সাইফুল করিমের দুই শ্যালক জিয়াউর রহমান ও আব্দুর রহমান, টেকনাফের পশ্চিম লেদার নুরুল কবির, হ্নীলা সিকদার পাড়ার সৈয়দ আহম্মরদ সৈয়দু, বন্দুকযুদ্ধে নিহত নাজির পাড়ার শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমানের ভাই আব্দুর রহমান, নাজির পাড়ার সৈয়দ হোসেন, নাইটং পাড়ার ইউনুস, ডেইল পাড়ার জাফর আলম, জাহাজপুরার নুরুল আলম, হ্নীলার রশিদ আহম্মদ প্রকাশ রশিদ খুলু, সদরের ডেইল পাড়ার আব্দুল আমিন ও নুরুল আমিন, টেকনাফ সদরের উত্তর লম্বরি এলাকার করিম মাঝি।

তাছাড়া হ্নীলা ফুলের ডেইলের রুস্তম আলী, শামলাপুর জুম পাড়ার শফিউল্লাহ, একই এলাকার সৈয়দ আলম, রাজাছড়ার আব্দুর কুদ্দুছ, মধ্যম জালিয়া পাড়ার মোজাম্মেল হক, জাহেলিয়া পাড়ার মোহাম্মদ সিরাজ, কচুবনিয়ার আব্দুল হামিদ, নাজিন পাড়ার মোহাম্মদ রফিক, পল্লান পাড়ার মোহাম্মদ সেলিম, নাইটং পাড়ার রহিমউল্লাহ, নাজিরপাড়ার মোহাম্মদ হেলাল, চৌধুরী পাড়ার মোহাম্মদ আলম, সদর ইউনিয়নের মৌলভি পাড়ার একরাম হোসেন।

তাছাড়া হ্নীলার পূর্ব পানখালির নজরুল ইসলাম সদর ইউনিয়নের তুলাতলি এলাকার নুরুল বশর, হাতির ঘোনার দিল মোহাম্মদ, একই এলাকার হাসান, সাবরাং নয়া পাড়ার নুর মোহাম্মদ, কচুবনিয়ার বদিউর রহমান প্রকাশ বদুরান, জালিয়া পাড়ার জুবায়ের হোসেন, হ্নীলার পূর্ব লেদার জাহাঙ্গীর আলম।

এদিকে কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, ‘আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো আছে সেসব মামলা আইনের গতিতে চলবে। তাদের যদি অবৈধ সম্পদ থাকে সে বিষয়টিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেখবে। পার পেয়ে যাওয়ার মতো কোনও সুযোগ থাকবে না। এছাড়াও আরও অনেক সিদ্ধান্তের বিষয় আছে, যেগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘মাদক বিশেষ করে ইয়াবা পাচারের কারণে সারাদেশে কক্সবাজারের যে দুর্নাম ছড়িয়েছে, সেই দুর্নাম ঘোচানোর জন্যই আমাদের এ উদ্যোগ। আশা করছি আমরা সফল হবো।’