তিতাসে গ্যাসফিল্ডে ভয়াবহ আগুন, উৎপাদন বন্ধ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাস গ্যাস ক্ষেত্রের ১নং লোকেশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে ঘটনার পর থেকে তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ১ এবং ২নং গ্যাস ক্ষেত্রের উৎপাদন সাময়িক বন্ধ রাখা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ ঘটনার পর থেকেই জাতীয় গ্রিডে অন্তত ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

তিতাস গ্যাস ফিল্ড সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্যাস ক্ষেত্রের ১নং লোকেশনের অগ্নিশিখা প্রজ্বালন লাইনের পাশে জমে থাকা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল থেকে আকস্মিকভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মুহূর্তেই আগুন কয়েকশ’ ফুট ওপরে উঠে যায়। এতে করে ফিল্ড অভ্যন্তরে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে।

তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে কর্মকর্তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। ফ্লেয়ার লাইনের কয়েকশ’ গজের মধ্যেই তিতাস গ্যাস ক্ষেত্রের ১ এবং ২নং কূপ থাকায় দ্রুত এসব কূপের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে এসব কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

বিজিএফসিএল ও ফায়ার সার্ভিস জানায়, তিতাস গ্যাসের কূপ থেকে গ্যাস উৎপাদন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তেল উৎপন্ন হয়। গ্যাস ক্ষেত্রের মধ্যে গ্যাস উৎপন্নের সময় অতিরিক্ত গ্যাস একটি ফ্লেয়ার লাইনের মাধ্যমে পুড়িয়ে বের করে দেওয়া হয়। ফ্লেয়ার লাইনটি মোমবাতির মতো একটি পাইলট, যা সর্বদা জ্বালিয়ে রাখা হয়। গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ওই ফ্লেয়ার লাইন দিয়ে গ্যাস নিঃসরণের সময় অতিরিক্ত তেল (কনডেনসেট) বের হয়।

আর এই কারণে গ্যাস ক্ষেত্রের ওই ফ্লেয়ার লাইন দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত আগুনের শিখা বেরিয়ে তা নিচে পড়ে আগুন ধরে যায়। মুহূর্তের মধ্যে আগুন তিতাস নদী-সংলগ্ন শহরতলির ঘাটুরা লোকেশন-১ এর পূর্ব দিকের নিচের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিজিএফসিএলের অগ্নিনির্বাপক দল আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে। পরে সরাইল ও আশুগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের দল প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিষয়টি নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা সাকরিয়া হায়দার বলেন, আগুন খুব বিরূপ আকার ধারণ করেছিল। ভয়াবহতা অনেক বেশি ছিল। তাই সরাইল ও আশুগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়েছিল। পরে সরাইল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের প্রায় ৩০-৩৫ জন সদস্য পানি ও ফোম ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তৌফিকুর রহমান তপু জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এ ঘটনা তদন্ত করা হবে।