আপনার লোকজনকে কি চাঁদাবাজি করে খেতে দেব নাকি? মন্ত্রীকে এসপি

আজ ১১ মার্চ সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ বলেন, ‘নৌপথে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা চাঁদা তোলা হচ্ছিল। এটি বন্ধের উদ্যোগ নিলে এক মন্ত্রী ফোন করে বলেন, তার লোকজন এখানে কাজ করে খায়। আমি পাল্টা প্রশ্ন করি, কেন আপনার নাম ব্যবহার করে চাঁদা তোলা হচ্ছে? আপনার লোকজনকে কি চাঁদাবাজি করে খেতে দেব নাকি? এতে আপনি আমার প্রতি মনঃক্ষুণ্ণ হলেও কিছু করার নেই।’

এ সময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া। তবে চাঁদাবাজদের পক্ষে তাকে ফোন করা মন্ত্রীর পরিচয় সম্পর্কে কিছু বলেননি নারায়ণগঞ্জের এই এসপি।

এ সময় পুলিশ সুপার বলেন, ‘কাগজপত্র ব্যতিরেকে নারায়ণগঞ্জে নৌপথে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার চাঁদা তোলা হচ্ছিল। চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছিল। নৌপরিবহনমন্ত্রীর সঙ্গেও এ ব্যাপারে কথা হয়। অবশেষে আমরা সেই চাঁদাবাজি বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছি।’

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে কোন প্রকার অরাজকতা, কারচুপি হতে দেওয়া হবে না। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। এর জন্য আমাদের যা যা করণীয়, তা করা হবে। নির্বাচনের সময় এমপি-মন্ত্রীদের নিজ এলাকায় না থাকার অনুরোধ করা হবে।’

এ সময় হারুন অর রশীদ বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের বড় সমস্যা হচ্ছে মাদক ও চাঁদাবাজি। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় মাদক চোরাচালান ও চাঁদাবাজি করবে, আর আমরা তাদের ধরতে পারব না- এমনটি হতে দিতে পারি না। আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।’

তিনি বলেন, ‘জেলার রূপগঞ্জ, ফতুল্লা, বন্দরসহ প্রতিটি উপজেলায় অনেক মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে। তারা অনেক বড় ভাইকে ম্যানেজ করে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। জেলায় গত তিন মাসে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় চারজন ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গার্মেন্ট সেক্টরে যে অসন্তোষ ছিল, তা এখন আর নেই।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে এখন বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে জুয়া। কয়েকটি জুয়ার আসর থেকে সম্প্রতি ৭০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আবাসিক হোটেলগুলোতেও অভিযান চালানো হচ্ছে।’

এ সময় সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জসিম উদ্দিন হায়দার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মনিরুল ইসলামসহ জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।