একটা ছেলে হুট করে আমার পথ আটকে দেয়: পপি

বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় তারকা অভিনেত্রী সাদিকা পারভিন পপি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এ চিত্রনায়িকা জানিয়েছেন তার প্রথম প্রেমের প্রস্তাব পাওয়ার ঘটনা। কেমন ছিল সেই দিনে ঘটনাটি।

বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় একটি প্রত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন নিজের এই ঘটনার কথা।

পপি বলেন, আমি জমিদার বংশের মেয়ে। ছোটবেলা থেকে খুব শাসনের বড় হয়েছি। শাসন বললে ভুল হবে, চোখে চোখে ছিলাম। আর এই বংশের লোকজনদের সবাই খুব ভালো করে চেনেন এবং ভয়ও পান। তাই প্রেমের প্রস্তাব দিতে অনেকেই ভয় পেতেন। তারপরও ছোটবেলায় প্রেমের প্রস্তাব পেয়েছি। সে ঘটনা আমার সারাজীবন মনে থাকবে।

তিনি বলেন, আমি তখন ক্লাস ফোর কিংবা ফাইভে পড়ি। ওই বয়সে ‘প্রেম’ শব্দটাই আমার কাছে অপরিচিত। তাছাড়া ছোটবেলা থেকেই আমি খুব শান্ত। এসবের আগে-পিছেও আমি নেই।

নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা দিতে গিয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এ অভিনেত্রী বলেন, একদিন স্কুলে যাওয়ার পথে একটা ছেলে হুট করে আমার পথ আটকে দেয়। হাতে একটি চিঠি নিয়ে, সে ছেলেটি আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এমন পরিস্থিতিতে আমি কখনও পরিনি। তাই অনেকটা মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে ছিলাম। এরপর ছেলেটি আমার হাতে সে চিঠিটা পুরে দিয়ে, উত্তরের অপেক্ষায় থাকে। ফেরার পথে আমি যেন এর উত্তর দেই, বলে ছেলেটি সেখান থেকে চলে যায়।

তিনি বলেন, এরপর আমি বেশ কিছুক্ষণ সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। এরপর কান্না শুরু করলাম। কাদঁতে কাদঁতে ক্লাসে ডুকলাম। আমাকে দেখে বান্ধবীরাও অবাক। সবাই জানতে চায়, কি হয়েছে? কান্নার কারণে আমি কিছু বলতে পারছিলাম না। আমার কান্নার কথা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কানেও পৌঁছে যায়।

এরপর শিক্ষকদেন আমি পুরো ঘটনাটা তাদের বললাম। তারা বিষয়টি আমার পরিবারে জানালেন। বাবা-মা স্কুলে ছুটে আসলেন। সব ঘটনা শুনে তারা বললেন, স্কুল ছুটির পর আমি যেন একা একা বাসায় ফিরি। যাতে ছেলেটি আমাকে একা দেখে, উত্তরের আশায় সামনে আসে। তাদের কথা মতো, স্কুল ছুটির পর একা একা বাসার উদ্দেশে হাঁটা শুরু করলাম। অনেকে পেছনে ছিলেন বাবা, মা ও স্কুলের শিক্ষকরা। আমাকে একা দেখে, বাইক চেপে ছেলেটি সামনে এসে হাজির। ঠিক তখন বাবা, মা ও শিক্ষকরা সবাই ছেলেটিকে ঘিরে ধরলেন।

পপি জানান, এরপর এই ঘটনায় স্থানীয় লোকজনরাও তখন বেশ ক্ষেপে ছিল। বাবা দেখলেন, এখন যদি তিনি ছেলেটিকে মারধর শুরু করেন তবে সে শেষ। তাই ছেলেটিকে তখন কিছু না করে এর বিচার চাইলেন বাবা। বিচারে ছেলেটির চুল কেটে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পর যারা মনে মনে আমাকে প্রেম নিবেদনের কথা ভাবছিলেন, তারাও ভয়ে কেটে পড়ে। সেদিনের ঘটনার পর থেকে, অভিবাবকরাও অনেক সচেতন হয়েছিলেন। তারা স্কুলের সামনা বা ফেরার পথে খুব নজর রাখতেন।

এভাবেই নিজের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন তিনি।