জীবিকার তাগিদে খেলা ছেড়ে পাঠাও চালান জাতীয় দলের খেলোয়াড়!

নিজের একমাত্র সন্তানের ভরণপোষণের জন্য হকিস্টিক ছেড়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হয় ঢাকা জেলা, জাতীয় যুব দলের নিয়মিত মুখ শফিকুল ইসলাম অনিককে। বর্তমানে মোটরসাইকেলে অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ার করে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি। এদিকে বাংলাদেশের হকিতে বইছে নির্বাচনের হাওয়া। তবে সে উত্তাপ নয়, অনিককে পীড়া দেয় চৈত্রের মধ্য দুপুরের কাঠফাটা রোদ।

বাংলাদেশের হকির নিয়মিত খোঁজ যারা রাখেন তারা বেশ ভালো করেই চেনেন শফিকুল ইসলাম অনিককে। ২ বছর বয়সে হাতেখড়ি, ২০০৬ থেকে পুরোদস্তুর পেশাদার খেলোয়াড়। ২০১১ থেকে প্রিমিয়ার ডিভিশন লিগ, সবশেষ হাতে নিয়েছিলেন বাংলাদেশ স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়কের অ্যার্মব্যান্ড।

কিন্তু দারুণ সম্ভাবনাময় এই তরুণকে হকির মাঠের প্রতিপক্ষ নয়, জীবনের প্রয়োজনে ডিফেন্স করতে হয় রোদ, ঝড় বৃষ্টিকে। স্টিক ছেড়ে জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছেন রাইড শেয়ারিং।

এ ব্যাপারে অনিক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তিন মাস আমার বাচ্চার বয়স চলছে, তার একটা ভবিষ্যৎ আছে। আমার একটা ভবিষ্যৎ আছে। আর এই ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করলে তো হকি খেললে হবে না। সঙ্কোচ আগে কিছু দিন লাগতো, এখন সংকোচ কেটে গেছে। আর কাজ করতে হলে, সঙ্কোচ বাদ দিতে হবে।’

এদিকে অনিকের এই ঝরে পড়ায় আক্ষেপের কারণও আছে। ১৯৭৪ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে কখনই নিয়মিত ছিলোনা খেলোয়াড়দের একমাত্র রুটিরুজির লিগ প্রিমিয়ার ডিভিশন হকি। যার প্রধান কারণ ফেডারেশন আর ক্লাব কর্তাদের দ্বন্দ্ব। আর এর খেসারত দিতে হয়েছে দেশের হকিকে।

এ ব্যাপারে অনিক বলেন, ‘আমাদের লিগ যে হয়, তার পেমেন্ট থাকে সবোর্চ্চ ৫ লাখ টাকা, এটা একদম সবোর্চ্চ খেলোয়াড় পায়। ফুটবলে ৯৪ নাম্বার র‍্যাকিং, তারা পেমেন্ট পায় ৫০ লাখ টাকা, তারা সর্বনিম্ন পেমেন্ট পায় ৩০ লাখ টাকা। আর আমাদের হকিতে মাত্র ২০ হাজার টাকা পেমেন্ট দেয়।’

আর এই বিষয়টি দারুণ ভাবে পীড়া দেয় সাবেক খেলোয়াড় ও বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাদেককেও। তাইতো নির্বাচনকে পাশ কাটিয়ে তার আহ্বান হকির স্বার্থে সবাইকে এক কাতারে দাঁড়ানোর।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনে সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাদেক বলেন, ‘এখন আমার কাজ হবে, ঢাকার মাঠে খেলা যেনো সারাবছর চলে সেই ব্যবস্থা করা। এবং যেই সব জেলায় খেলা হয়, সেখানে আমাদের টাকা বিনিয়োগ করতে হবে।’