টুঙ্গিপাড়ায় কাঁদলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মাত্র সাড়ে তিন বছর দেশ পরিচালনার সময় পেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। এরই মধ্যে শিশুদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক করেছিলেন তিনি। মাধ্যমিক পর্যন্ত তিনি মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করেন। বঙ্গবন্ধু অনেক দূরদর্শী ছিলেন। ১৯৭৪ সালে শিশুদের অধিকার সংরক্ষণে আইন প্রণয়ন করেন। জাতিসংঘ শিশুদের জন্য তখনও কোনো আইন করেনি। জাতিসংঘ ১৯৮৯ সালে শিশুদের জন্য আইন করেছে। পরবর্তীতে ২০১১ সালে বঙ্গবন্ধুর সেই উদ্দেশ্যের আলোকে আমরা জাতীয় শিশু নীতি প্রণয়ন করি। শিশুর অধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে শিশুদের পরিচয় করে দিচ্ছি আমরা।

রবিবার (১৭ মার্চ) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতীয় শিশু দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিশুদের জন্য একটি সুন্দর বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে আজকের শিশুরা আগামীতে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। আগামীতে দেশের নেতৃত্ব দেবে তারা। শিশুরা যাতে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে, শিক্ষা ও খেলাধুলায় পারদর্শী হয়ে ওঠে সেদিকে দৃষ্টি রয়েছে আমাদের। বঙ্গবন্ধু যেভাবে দেশটা গড়তে চেয়েছেন ঠিক তার স্বপ্নের দেশ গড়তে কাজ করছি।

তিনি শিশুদের উদ্দেশে বলেন, আমরা একেবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে দেশের সব শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে বই দিচ্ছি। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের ব্রেইল বইয়ের ব্যবস্থা করেছি। মোবাইলের মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে দিচ্ছি। স্কুলে টিফিনের ব্যবস্থা করেছি। মেয়েদের জন্য সুব্যবস্থা করেছি, যাতে আমাদের মেয়েরা মানুষের মতো মানুষ হয়।

আবেগাপ্লুত হয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে শেখ হাসিনা বলেন, আমি পরিবার হারিয়েছি, আপনজন হারিয়েছি। আমরা দুই বোন বিদেশে ছিলাম বলে প্রাণে বেঁচে যাই। কিন্তু সেদিন বাংলাদেশের মানুষ হারিয়েছিল তাদের বেঁচে থাকার সব সম্ভাবনা, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। ১৯৭৫ সালের পর আমাদের শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী কেউই মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। তবে সত্যকে কখনও মিথ্যা দিয়ে ঢাকা যায় না। সত্যের জয় একদিন হবেই। সেটাই প্রমাণ হয়েছে আজ, সত্য উদ্ভাসিত হয়েছে ঠিকই।