দু’একটা প্রভাবশালীর অবৈধ ভবন ভেঙে দেখাক রাজউক: সাঈদ খোকন

আজ ৩১ মার্চ রবিবার রাজধানীর কলাবাগানের ইয়াকুব সাউথ সেন্টারে স্টেট ইউনিভার্সিটি আয়োজিত ‘অগ্নিকাণ্ড; কারণ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, ‘ঢাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে সাড়ে ৫ হাজার ভবন। আজ রাজউক চাইলেই তা ভাঙা অসম্ভব। সাধারণ নাগরিকরা বিশ্বাসও করেন না এই অবৈধ ভবন ভেঙে রাজউক নতুন শহর উপহার দেবে।’

‘কিন্তু রাজউক তো একটা কাজ করতেই পারেন যে, প্রতীকী অর্থে প্রমাণ করে দিক একজন সর্বোচ্চ প্রভাবশালীর দ্বারা অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ভবনটি ভেঙে ফেলুক। তাহলেই বুঝবো রাজউকের সদিচ্ছা, আন্তরিকতা রয়েছে।’

সাঈদ খোকন আরও বলেন, ‘রাজধানীতে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে সাড়ে ৫ হাজার ভবন। রাজধানীর এইসব অবৈধ ভবন ভাঙার কি ক্যাপাসিটি রয়েছে রাজউকের? ভেঙে সেখানে নতুন করে গড়বার সাধ্য কি আছে? ভাঙতে গেলেও তো সেখানে যে ময়লা হবে তার ডাম্পিং কোথায় করবে? এটা তো অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু এই ভবনগুলো তো একদিনে গড়ে ওঠেনি। আইন অমান্য করে কেউ না কেউ তো এই ভবনগুলো অবৈধভাবে করেছি। অন্য কোনো দেশের নাগরিক করেনি। আমাদের নাগরিকরাই করেছে।’

সাঈদ খোকন বলেন, ‘উচিত ছিল তখনই যখন ভবনগুলো নির্মাণ হচ্ছিল তখন বাধা দেয়া ও আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা। আজকে এই ভবনগুলো যদি ভাঙতে চাই তা তো অসম্ভব।’

মেয়র বলেন, ‘এই যে সমস্যা তা একদিনে সৃষ্টি হয়নি। বছরের পর বছর অব্যবস্থাপনা, অবহেলা আর অসক্ষমতার মধ্য দিয়ে তৈরি হয়েছে। আজকে রাজউক এই সাড়ে ৫ হাজার ভবন ভাঙবে-এটা সাধারণ নাগরিকরা বিশ্বাসও করেন না। কিন্তু দু’একটা প্রভাবশালীর অবৈধ ভবন ভেঙে তো রাজউক প্রমাণ দিতেই পারে যে তারা পারে।’

সাঈদ খোকন আরও বলেন, ‘ঢাকা পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতির দেশ। ঢাকায় প্রতিদিন নতুন মানুষের আগমন ঘটে ৬ হাজার। ঢাকার মধ্যে পুরান ঢাকা আরও বেশি ঘনবসতির। ঢাকার প্রবৃদ্ধি উল্লেখজনক হারে বাড়ছে। কিন্তু অনেকেই শহুরে জীবনে অভ্যস্ত নন।’

মেয়র বলেন, ‘সচেতনতা সবার জন্যই। সমাজের অনেক মানুষ রয়েছে শিক্ষিত দামি গাড়িতে ঘুরছে। কিন্তু অসচেতন মনে ওয়াটার বোতল, ব্যবহৃত টিস্যু রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দিচ্ছেন। শিক্ষিত মানুষের মধ্যে যদি বোধ খুঁজে না পাই তাহলে অর্ধশিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত মানুষকে দোষ দিয়ে কি লাভ?’

এ সময় অগ্নিকাণ্ডের ক্ষেত্রে সচেতনতার বিকল্প নেই বলে জানান মেয়র। এ সময় মেয়র আরও বলেন, ‘চুরিহাট্টার অগ্নিকাণ্ডের পর সবাইকে সচেতন হবার অনুরোধ জানানো হয়। সবাই আগ্রহীও হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে কেমিক্যাল সরাতে বলা হয়। এরপর কিন্তু আরও একটি আগুনের ঘটনা ঘটেছিল। প্রস্তুতি থাকায় বড় ধরনের কিছু ঘটেনি। এজন্য সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি।’