বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র নিহত, ১২ দফা দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমেছে শিক্ষার্থীরা

প্রতিদিনের মতো আজও বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে বের হন আবরার আহমেদ চৌধুরী। কিন্তু কে জানতো আজই তার জীবনে ইতি ঘটবে। আর সেটা কেড়ে নেভে ঘাতক বাস। নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন করেছিলেন যিনি অথচ সেই সড়কেই প্রাণ গেল তার।

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এর ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরী রাজধানীর প্রগতি সরণিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। আবরার নিরাপদ সড়কের দাবিতে সোচ্চার ছিলেন। অথচ ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সড়ক দুর্ঘটনায়ই তার মৃত্যু হলো।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর নর্দা-বসুন্ধরা এলাকায় দ্রুতগতিতে চালিয়ে যাওয়া যাত্রীবাহী বাসের চাপায় নিহত তিনি। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে যাওয়া ওই বাসচালককে এবং জব্দ করা হয়েছে বাসটিকে।

দুর্ঘটনায় নিহত আবরার বিইউপির ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। পরে আবরারের লাশ রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে সোচ্চার ছিলেন। নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে সমর্থন থাকার বিষয়টি জানা যায় আবরারের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে। অথচ তার প্রাণ গেল সড়কেই।

এদিকে, সড়কে বেপরোয়া বাসচাপায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। ঘাতক সুপ্রভাত পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল, ঘাতক চালকের ফাঁসির দাবিসহ ১২ দফা দাবিতে নানা স্লোগান দিচ্ছে তারা। সড়কের দুপাশেই অবস্থান নিয়ে আছে তারা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সড়ক ছাড়বে না বলে জানিয়েছে তারা। শিক্ষার্থীরা নানা স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করছে। এই সড়কে যান চলাচল একেবারেই বন্ধ রয়েছে।

এদিকে, ঢাকা সিটি উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্ক এলাকায় রাস্তা বন্ধ করে অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের কাছে যান। তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া যত দ্রুত সম্ভব মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন। সেইসঙ্গে লিখিতভাবে দাবিগুলো উত্থাপনের অনুরোধ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা মেয়রের কাছে দাবিগুলো জানালেও সড়ক ছাড়ছে না।

১২ দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, ১০ দিনের মধ্যে সুপ্রভাত বাসের চালক, হেলপার ও মালিকের ফাঁসি। সু-প্রভাত ও জাবালে নূরসহ যেসব বাস আজ ও এর আগে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে সেসব বাসের রুট পারমিট বাতিল। চালক হেলপারের ডোপ টেস্ট। বাস-সহ গণপরিবহনের চালক-হেলপারের আইডি কার্ড ভিজিবল করা। বসুন্ধরা আবাসিক/যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে জেব্রা ক্রসিংসহ নিহত আবরারের নামে ফুটওভার ব্রিজ করতে হবে দুই মাসের মধ্যে। এ ছাড়া আরও অন্যান্য দাবি রয়েছে।