ভারতের পথে আটক পাইলট অভিনন্দন

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় দেশটির আধাসামরিক বাহিনীর গাড়িবহরে হামলায় অন্তত ৪৪ সেনা নিহত হয়। আর এ আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ। ভারত এ হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদদ রয়েছে বলে দাবি করে আসছে দেশটি। তবে পাকিস্তান এ হামলার দায় নিতে নারাজ।

কাশ্মীরের ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে এখন যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব চলছে। গত বুধবার পাকিস্তান সীমান্তে ভারতীয় দুই যুদ্ধবিমানকে ভূপাতিত করেন পাকিস্তান সেনারা। জবাবে ভারত পাকিস্তানের দুটি যুদ্ধবিমানকে ভূপাতিত করে। ঘটনাপ্রবাহে পাকিস্তান বাহিনীর হাতে বন্দি হন দেশটির এক পাইলট।

ভারতীয় পাইলটকে আটকের পর তার সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদ্ব্যবহারের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন দেশটির ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি। তিনি বলেন, পাকিস্তানের সেনাদের জন্য গর্ববোধ করি। পাকিস্তান সেনাদের স্যালুট। আটক ভারতের পাইলট অভিনন্দনের একটি ভিডিও টুইটারে শেয়ার করেন আফ্রিদি। বুম বুম আফ্রিদির এই টুইটটি ভাইরাল হয়। এতে লাইক দিয়েছেন ২৯ হাজারের বেশি মানুষ।

ভিডিওতে দেখা গেছে, অভিনন্দন নামে ওই পাইলট চা খেতে খেতে বলেছেন- তার সঙ্গে ভালো আচরণ করেছেন পাকিস্তান সেনারা। তিনি পাকিস্তান সেনাদের ব্যবহারে অভিভূত। তাদের কাছে অনেক কিছু শেখার আছে বলেও মন্তব্য করেন।

এদিকে, ভারতীয় বিমান বাহিনীর পাইলট উইং কমান্ডার অভিনন্দন ভারতের পথে রওনা দিয়েছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদ থেকে তাকে নিয়ে আসা হচ্ছে লাহৌরে। সড়কপথে নিয়ে আসা হচ্ছে তাকে। খবর দিয়েছে আনন্দবাজার।

ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্র জানায়, শুক্রবার দুপুরের পর যে কোনো সময় অমৃতসরের ওয়াঘা-আতারি সীমান্তে আনা হবে অভিনন্দনকে। সেখানেই তাকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে। প্রথমে তাকে রাওয়ালপিণ্ডি থেকে লাহৌরে আনা হবে। আর সেখানে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেড ক্রস (আইসিআরসি)-এর হাতে তুলে দেওয়া হবে। তার পরে তাকে নিয়ে আসা হবে ওয়াঘা-আতারি সীমান্তে। সেখান থেকে অভিনন্দনকে নিয়ে যাওয়া হবে দিল্লিতে।

বিষয়টি নিয়ে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহও ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে টুইট করে জানিয়েছেন অমৃতসরের আতারি সীমান্তে অভিনন্দনকে গ্রহণ করতে তিনি নিজে উপস্থিত থাকবেন। পাশাপাশি ছেলেকে নিতে অমৃতসরে পৌঁছে গিছেন তার বাবা এয়ার মার্শাল এস বর্তমান ও মা শোভা বর্তমান।

পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী টুইটে লেখেন, অমৃতসরে আছি। জানতে পেরেছি যে, পাক সরকার অভিনন্দনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওয়াঘা সীমান্তে তাকে আনা হবে। সীমান্ত থেকে তাকে গ্রহণ করা আমার কাছে একটা বড় সম্মানের বিষয়।

এর আগে পাক প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টে বলেছেন, শুক্রবার অভিনন্দনকে মুক্তি দেওয়া হবে।

ইমরান খান বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে। সব সঙ্কটই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। কারতারপুর করিডর খোলা সত্ত্বেও আমরা ভারতের কোনো সাড়া পাইনি। পুলওয়ামা হামলার ৩০ মিনিটের মধ্যে আমাদের ওপর দায় চাপানো হলো। আমি বলছি না যে, ভারতের কোনো বিষয়ে পাকিস্তানের ভূমিকা আছে, তবে আমি তাদের তথ্য-প্রমাণ শেয়ার করার আহ্বান জানিয়েছিলাম।’