মাঝরাতে অনশনকারী ছাত্রীদের হেনস্তার অভিযোগ গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে

দীর্ঘ ২৮ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ প্যানেলের নুরুল হক নুর সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

অনুষ্ঠিত হওয়া এ নির্বাচনে ২৫তম ভিপি হিসেবে ডাকসুর গৌরবমাখা ইতিহাসের অংশ হলেন তিনি। আর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হিসেবে জয় পেয়েছেন গোলাম রাব্বানী এবং এজিএস হিসেবে জয় পেয়েছেন সাদ্দাম হোসেন। আর তারা দুইজনই ছাত্রলীগের ব্যানারে নির্বাচন করেন।

সোমবার (১১ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে নির্বাচনের এ ফলাফল ঘোষণা করেন।

এদিকে, ডাকসু ও হল সংসদের পুনর্নির্বাচনের দাবিতে আমরণ অনশন করছে রোকেয়া হলের পাঁচ ছাত্রী। আর সেই পাঁচ ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর নবনির্বাচিত জিএস গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, রাব্বানী নেতাকর্মীদের নিয়ে তাদের হুমকি-ধামকিও দেন।

বিষয়টি নিয়ে গোলাম রাব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, ‘হলের গেট খোলা রেখে ছাত্রীদের অবস্থানের কথা শুনে অন্য শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখানে আমি আসি। এসে দেখি, কয়েকজন মদ-গাঁজা খেয়ে এখানে আন্দোলন করছে। এই ১০-১৫ জনের কারণে অন্যদের ক্ষতি হলে সে দায় নেবে কে?’

গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘এরাই ভোটের দিন ব্যালট ছিনতাই করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোট দিতে দেয়নি। প্রভোস্ট ম্যামকেও লাঞ্ছিত করেছে। সবারই আন্দোলন, অনশন করার রাইট আছে। কিন্তু রাত দুইটার দিকে হলের গেট খোলা রেখে অন্যের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার রাইট কারও নাই।’এ সময় বোরকা পরে মুখ ঢাকা মেয়েরা এখানে কেন?

তিনি অনশনকারীদের কয়েকজন সমর্থককে দেখিয়ে ছাত্রলীগ নেত্রীদের প্রশ্ন করেন, ‘রাত দুইটার দিকে বোরকা, নেকাব পরা এরা কারা? ছাত্রী সংস্থা? শিবিরের কর্মী? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের অবস্থান নিষিদ্ধ।’

বিষয়টি রাব্বানী প্রক্টরকে জানিয়ে বলেন, হলের কিছু মেয়ে মধ্যরাতে গেট খুলে বাইরে অবস্থান করে অন্য শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছেন।

তিনি বলেন, ‘এরা খুব বাড়াবাড়ি করছে, স্যার। এদের সবগুলোর ফাইল দেখে চিহ্নিত করে, গার্ডিয়ান ডেকে এনে স্থায়ীভাবে একাডেমিক বহিষ্কার করেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খোদা হাফেজ করে দেন।’

তবে এ বিষয়ে অনশনকারী শ্রবণা শফিক দীপ্তি সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাতে গোলাম রাব্বানী নেতাকর্মীদের নিয়ে এসে ছবি দেখিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করেন। একজনকে চরিত্রহীন প্রমাণের চেষ্টা করেন। আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, আমরা মদ-গাঁজা খেয়ে আন্দোলন করছি। এ ছাড়া আমাদের চিহ্নিত করে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের হুমকিও দেন তিনি।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, রাত দেড়টার দিকে মোটরসাইকেলে করে ছাত্রলীগ শতাধিক নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে রোকেয়া হলের সামনে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও ডাকসুর নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী। এসেই তিনি ছাত্রীদের হলের ফটকের বাইরে অনশন করা ও তাদের সমর্থকদের অবস্থান নিয়ে মোবাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলেন গোলাম রাব্বানী।