মুসলিমবিদ্বেষ সইতে না পেরে চাকরি ছাড়লেন স্কাই নিউজের নারী সংবাদিক

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ মসজিদের জঙ্গি হামলার পর থেকে বিভিন্ন যায়গাতে মুসলিমবিদ্বেষী মন্তব্য যেন দিন দিন বেড়ে চলেছে। এবার মুসলিমবিদ্বেষ সইতে না পেরে চাকরি ছাড়লেন স্কাই নিউজের নারী সংবাদিক।

রাশনা ফাররুক নামে স্কাই নিউজের এক জুনিয়র গণসংযোগ কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, মুসলমানদের বিরুদ্ধে ভাষ্যকাররা মেরুকরণ ও আতঙ্ক বাড়িয়ে তুলছেন। তিনি স্কাই নিউজ টেলিভিশনের তিন বছর কাজ করেছেন।

এবিষয়ে এবিসি অনলাইনকে তিনি লিখেছেন, কোনো কোনো রাতে আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়তাম। এমনকি বাড়ি আসার পথে গাড়ির ভেতরে আমি কান্না করতাম। কারণ নিজের মূল্যবোধের সঙ্গে নিয়মিত আপস করতে হচ্ছে আমাকে।-খবর দিয়েছে গার্ডিয়ান।

রাশনা ফাররুক বলেন, ক্রমাগত দোষ চাপিয়ে দেয়া একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর একজন সদস্য হিসেবে নিজের মূল্যবোধের সঙ্গে আপস করাই শেষ কথা ছিল না, বরং অনুষ্ঠানগুলোতে মুসলিমবিদ্বেষী প্রচারের কারণেও তিনি নিরুৎসাহিত হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, যখন ভাষ্যকার ও পণ্ডিতরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে দর্শকদের আতঙ্কিত করে তুলতেন, তখন আমি নিজের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের সঙ্গে আপস করে অলসভাবে দাঁড়িয়ে থাকতাম।

এদিকে, রাশনার লেখা প্রকাশ করায় এবিসি নিউজের সমালোচনা করেছেন স্কাই নিউজের ভাষ্যকার ক্রিস কেন্নি।

এই সংবাদকর্মী দাবি করেন, স্কাই নিউজ অস্ট্রেলিয়া মসজিদের ভেতর থেকে ছবি প্রকাশ করেছে। কিন্তু স্কাই নিউজ বলছে, তারা খুনি শ্বেতাঙ্গ জঙ্গির হত্যার দৃশ্যের সরাসরি সম্প্রচারের একটি অংশ প্রচার করেছেন, মসজিদের ভেতর থেকে নয়। এমনকি যেসব ভাষ্যকারের সাক্ষাৎকার রাশনা ফাররুককে মানসিকভাবে পীড়া দিত, তাদের নাম প্রকাশ করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় মুসলিম ও অভিবাসীদের হয়ে প্রতিবাদকারী দর্শকদের ফোনের জবাব দিতাম আমি। কিন্তু তারা জানতেন না, ফোনের এ পাশে যে নারী তাদের সঙ্গে আলাপ করছেন, সেও তাদের মতো একজন।

স্কাই নিউজের এই নারী সংবাদকর্মী বলেন, ‘যখন ভাষ্যকাররা দেশের প্রতিটি সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ঝাড়ছে, তখন স্টুডিওর অপর পাশের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকতাম আমি। তারা দর্শকদের মধ্যে মেরুকরণ ও মানসিক বৈকল্য তৈরি করে যাচ্ছিলেন।’