সেই ঘাতক চালক ও হেলপারের মুখে ওয়াসিম হত্যার বর্ণনা

গতকাল শনিবার ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াসিম তাহসিনকে হত্যার অভিযোগে বাসের চালক এবং তার সহকারীকে হেলপার আটক করেছে পুলিশ। বাসের চালক জুয়েল আহমদকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এবং হেলপার মাসুক আলীকে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে আটক করা হয়।

গতকাল শনিবার রাত ৩টার দিকে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে ছাতক উপজেলার সিংচাপইড় ইউনিয়নের সিংচাপইড় গ্রামে শ্বশুরবাড়ি থেকে হেলপার মাসুককে আটক করে সুনামগঞ্জ পুলিশ। তিনি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের তেঘরিয়া এলাকার মৃত দৌলত আলীর ছেলে।

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) আনোয়ারুল হক গণমাধ্যমকে জানান, স্থানীয় থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে তাদের নিজ নিজ এলাকা থেকে আটক করে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

এ সময় চালক ও হেলপারের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘শনিবার বিকেলে নবীগঞ্জের টোলপ্লাজা থেকে সিলেট যাওয়ার উদ্দেশে উদার পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-১৪:১২৮০) বাসে ওঠেন সিকৃবির কয়েকজন ছাত্র। এ সময় হেলপার মাসুক মিয়া তাদের কাছে ১০০ টাকা ভাড়া দাবি করেন। এতে ওয়াসিম ও তার বন্ধুরা ছাত্র পরিচয় দিয়ে ভাড়া কম দেয়ার কথা জানান।’

‘এ সময় হেলপার ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। এক পর্যায়ে তারা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শেরপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে নেমে যান। নামার সময় পেছন থেকে হেলপার তাদের গালি দেন। এতে ওয়াসিম বাসের সিঁড়িতে উঠে হাতল ধরে কেন গালি দিলেন তা জিজ্ঞেস করতেই চালক গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেন। আর ঠিক তখনই হেলপার মাসুক মিয়া ওয়াসিমকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেন।’

‘সঙ্গে সঙ্গে বাসের পেছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ওয়াসিম গুরুতর আহত হন। পরে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’

এদিকে ওয়াসিম আব্বাসকে হত্যার ঘটনায় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) ক্লাস পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সকাল ১১টায় ক্যাম্পাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেছেন।