স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিলেন হোসনে আরা

আজ শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়ের সময় নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত তিন বাংলাদেশির মধ্যে একজন সিলেটের হোসনে আরা ফরিদ (৪২)। সন্ত্রাসী হামলা থেকে বেঁচে গেছেন তার অসুস্থ স্বামী ফরিদ উদ্দিন আহমদ।

পারভীনের নিহত হওয়ার খবরে দেশে থাকা তার পরিবারের সদস্যরা হতভম্ব হয়ে পড়েছেন। সন্ত্রাসী হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া পারভীনের স্বামী ফরিদ উদ্দিন আহমদ বর্তমানে ক্রাইস্টচার্চ এলাকায় আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে তাদের তার বাসায় রয়েছেন। ফরিদ উদ্দিনের বাড়ি বিশ্বনাথ উপজেলার চকগ্রামে। আর তার স্ত্রী হোসনে আরার বাবার বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জের জাঙ্গাল হাটা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত নুরুদ্দিনের মেয়ে। তারা তিন বোন ও দুই ভাই।

এদিকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করে নিহত হোসনে আরার ভাগ্নে মাহফুজ চৌধুরী বলেন, ‘নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ এলাকায় দুটি মসজিদ রয়েছে। একটি মসজিদে নারীরা ও অন্যটিতে পুরুষরা নামাজ আদায় করেন। ঘটনার প্রায় আধঘণ্টা আগে আমার খালা তার অসুস্থ স্বামীকে (প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত) নিয়ে মসজিদে যান। সেখানে খালা তার স্বামীকে হুইল চেয়ার করে পুরুষদের মসজিদের ভেতরে রেখে নিজে নারীদের মসজিদে চলে যান। দুটি মসজিদই পাশাপাশি।’

এ সময় মাহফুজ চৌধুরী আরও বলেন, ‘প্রায় ১৫ মিনিট পর পুরুষদের মসজিদের ভেতরে গুলির শব্দ শুনে হোসনে আরা তার স্বামীকে বাঁচানোর জন্য বের হন। এসময় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাকে গুলি করলে তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান।’

এ সময় নিউজিল্যান্ডে বসবাসকারী আত্মীয়দের বরাত দিয়ে মাহফুজ চৌধুরী বলেন, ‘মসজিদের বাইরে গুলির শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন মুসল্লি হুইল চেয়ারে করে ফরিদ উদ্দিনকে মসজিদ থেকে বের করে নেওয়ায় তিনি বেঁচে গেছেন। ফরিদ উদ্দিন ও হোসনে আরা ক্রাইস্টচার্চ এলাকায় বসবাস করতেন।’

এদিকে পারিবারিক সূত্র জানায়, নিহত হোসনে আরা ও ফরিদের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। গত ১৯৯৪ সালে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর তারা নিউজিল্যান্ডে চলে যান। সর্বশেষ ২০০৯ সালে তারা বাংলাদেশে এসেছিলেন।

তাছাড়া এ হামলায় আরো দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। তারা হলেন-স্থানীয় লিঙ্কন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আবদুস সামাদ ও তার স্ত্রী। নিহত ড. সামাদ বাংলাদেশে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন।