কেন্দ্রে গেলেই তুলে নেয়ার হুমকি, পুলিশি পাহারায় এইচএসসি দিচ্ছে বিউটি

পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলেই তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকির কারণে এইচএসসির প্রথম দিনের পরীক্ষা দেয়া হয়নি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মচমইল ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী বিউটি খাতুনের।

এর আগে গতকাল ২ এপ্রিল মঙ্গলবার পুলিশি পাহারায় দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে বিউটি। এর আগে গত ১ এপ্রিল সোমবার এ বিষয়ে আদালতে মামলা করে বিউটি খাতুন।

এদিকে বিউটি খাতুন উপজেলার মাধাইমুড়ি গ্রামের বাবর আলীর মেয়ে। সাত মাস আগে পরিবারের অমতে উপজেলার তেলীপুর গ্রামের মন্টু প্রামাণিকের ছেলে সিরাজুল ইসলামকে বিয়ে করে বিউটি। বিয়ের পর স্বামীর বাড়ি থেকে বিউটি লেখাপড়া করে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়। বিউটির দাবি, প্রেম করে বিয়ে করার কারণে স্বামীর কাছ থেকে দূরে রাখতেই তার বোনের স্বামী তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে ওই ছাত্রীর স্বামী সিরাজুল ইসলাম জানান, সোমবার আদালতে মামলা করার পর ওই রাতেই পুলিশ তাদের বাড়িতে যায়। নিরাপত্তাসহ বিউটিকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় পুলিশ। পরে মঙ্গলবার পুলিশি নিরাপত্তায় পরীক্ষা দেয় বিউটি।

এ ব্যাপারে বাগমারা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহম্মেদ বলেন, ‘ওই ছাত্রী আদালতে মামলা করেছেন। তবে মামলাটি এখনো থানায় আসেনি। হুমকিতে ওই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা দেয়া হচ্ছে না জানতে পেরে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। যতদিন ছাত্রী পরীক্ষা দেবে তাকে পরীক্ষাকেন্দ্রে আনা-নেয়া করবে পুলিশ।’

এ সময় পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এটা কোনো সন্ত্রাসী হুমকি নয়। তাদের পারিবারিক কোন্দলের জের ধরেই এ ঘটনা ঘটেছে। বোনের স্বামীসহ পাঁচজনের নামে ওই ছাত্রী মামলা করেছে। এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ ব্যাপারে বিউটি খাতুন বলেন, ‘চার বছর প্রেমের পর সিরাজুলকে বিয়ে করি। কিন্তু বিয়ের পর থেকে আমার বোনের স্বামী ভবানীগঞ্জ পৌরসভা এলাকার একডালা গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বিয়ে বিচ্ছেদের জন্য উঠেপড়ে লাগেন।’

‘এরই অংশ হিসেবে বাবার বাড়িতে ডেকে নিয়ে আমার স্বামীর ওপর নির্যাতন চালান জাহাঙ্গীর। জিম্মি করে পরে সিরাজুলকে দিয়ে তালাকনামায় সই করিয়ে নেন। খবর পেয়ে ওই রাতেই আমার স্বামীকে উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থেকেই অব্যাহত হুমকি পাচ্ছি আমরা।’