‘ডিম বালক’কে নিয়ে সুর পাল্টালো অস্ট্রেলিয়া

গত ১৫ মার্চ হামলায় আল নূর মসজিদে ৪২ জন, সাতজন লিনউড মসজিদে এবং একজন পরে নিহত হন। ক্রাইস্টচার্চে ওই দুটি মাসজিদে হামলায় ৫০ জন নিহত হয়। মসজিদে হামলার পর বৈষম্যবাদী মন্তব্য করে অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ফ্রেজার অ্যানিং। তার এই মন্তব্যের জন্য তার মাথায় ডিম ভাঙা হয়েছিল, তিনি আত্মরক্ষার তাড়না থেকে হামলাকারীর ওপর চড়াও হয়েছিলেন বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছে পুলিশ। খবর বিবিসি।

পরবর্তীতে ডিম ভাঙার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ায় একটি বিতর্ক ছড়িয়ে পরেছিল – এই ঘটনার জন্য দু’জনের কোনো একজনকে আইনের আওতায় আনা উচিত কিনা, এবং ইনের আওতায় আনা হলে কাকে আনা হবে। এরই মধ্যে অ্যানিংয়েরে মাথায় ডিম ভেঙে ‘ডিম বালক’ উপাধি পেয়ে জনপ্রিয়তা লাভ করা ১৭ বছর বয়সী ঐ কিশোর। তবে পুলিশ তাকে সতর্ক করেছে, তবে জানিয়েছে যে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হবে না।

এদিকে অস্ট্রেলিয়ান কর্তৃপক্ষ জানায় যে, ওই বালককে আঘাত করার অপরাধে সিনেটরকে ‘অভিযুক্ত না করার’ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বোঝা যায় যে, ৬৯ বছর বয়সী সিনেটরের প্রতিক্রিয়া আত্মরক্ষামূলক ছিল এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।

পুলিশ জানায়,ডিম নিয়ে আক্রমণ করা কিশোরটির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া না হলেও তাকে ‘আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্ক’ করা হবে।

তবে সে সময় ডিম দিয়ে আক্রমণ করার জন্য অনেকে ওই কিশোরের সমালোচনা করলেও অনলাইনে তার ব্যাপক প্রশংসা করা হয়। দ্রুতই তাকে ‘ডিম বালক’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। এমনকি আইনি সহায়তার জন্য প্রয়োজন হতে পারে বলে একটি অনলাইন প্রচারণায় ৮০ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলারের (৪৩ হাজার পাউন্ড) বেশি অর্থ তোলা হয়।

সেসময় স্থানীয় গণমাধ্যম টেন নেটওয়ার্ককে কিশোরটি বলেন, “আমি বুঝতে পারি যে, আমি যা করেছি তা সঠিক কাজটি নয়। তবে এই ডিমটি মানুষকে একত্রিত করেছে।”

তবে সিনেটর তার মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাননি; যদিও তার ঐ মন্তব্যের পর তার বিরুদ্ধে ব্যাপক জনরোষ তৈরি হয় এবং তার পদত্যাগ চেয়ে তৈরি করা এক গণ আবেদনপত্রে ১৪ লাখ মানুষ স্বাক্ষর করে। যদিও সিনেটের পক্ষ থেকে মি. অ্যানিংয়ের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে নিন্দা জানানো হয়।

নিন্দা বার্তা বলা হয়, ‘ভয়াবহ অপরাধের দায় ভুক্তভোগীদের ওপর চাপানো এবং ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে দোষারোপ’ করার দায়ে তার বিরুদ্ধে নিন্দা জ্ঞাপন করে সিনেট।