নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হামলাকারীর মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ

গত ১৫ মার্চ হামলায় আল নূর মসজিদে ৪২ জন, সাতজন লিনউড মসজিদে এবং একজন পরে নিহত হন। ক্রাইস্টচার্চে ওই দুটি মাসজিদে হামলায় ৫০ জন নিহতের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্রেন্টন ট্যারেন্ট বিচারের জন্য উপযোগী কিনা তা জানতে তার মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে নিউজিল্যান্ডের একজন বিচারক।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারক ক্যামেরন মান্ডার এ আদেশ দেন।

সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে অকল্যান্ডের কারাগারের একটি কক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানিতে অংশ নেন ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ট্যারেন্ট। ক্রাইস্টচার্চের আদালতের বড় পর্দায় যখন ট্যারেন্টকে দেখা যায় তখন তার পরনে ছিল ধূসর রংয়ের একটি সোয়েটার। তার হাতে হাতকড়া পরানো ছিল। হামলায় হতাহতদের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে আদালত ছিল পরিপূর্ণ। কেউ কেউ হুইলচেয়ারে করেও আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন। হামলায় আহতদের অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

কিন্তু এই শুনানি চলাকালে ট্যারেন্টকে আবেগী মনে হয়নি। তিনি মাঝে মাঝে ঘরের চারপাশে তাকান বা মাথা উচু করেন, মনে হয় কি বলা হচ্ছে তা শুনে তার ভালোই লাগছে।

এর পরে বিচারক ব্যাখ্যা করেন, ট্যারেন্ট শুধু বিচারক এবং আইনজীবীদের দেখতে পাচ্ছেন। তবে গ্যালারিতে বসা সাধারণ মানুষকে তিনি দেখতে পাচ্ছেন না।

এদিন ট্যারেন্ট শুধু একবারই কথা বলেছেন। যদিও তার কণ্ঠ বাইরে আসছিল না। কেননা ভিডিওর শব্দ বন্ধ ছিল। এটা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে, শব্দ ইচ্ছাকৃতভাবে নাকি অনিচ্ছাকৃতভাবে বন্ধ ছিল।

এদিকে মান্ডার জানান, মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়া তার আদেশের কোনো কিছু পড়া উচিৎ হবে না। আর এ ধরনের মামলায় এটি (মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা) স্বাভাবিক পদক্ষেপ।

এ বিষয়ে আইনজীবীরা জানান, এটা সম্পন্ন করতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ সময় লাগবে। আদালত কক্ষে দুই ডজনেরও বেশি সাংবাদিক এবং প্রায় ৬০ জন সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

আরবি ও ইংরেজি ভাষায় শুনানি চলাকালে আদালতের একজন রেজিস্ট্রার আদালতে উপস্থিত হওয়া মানুষদের শুভেচ্ছা জানান। এ সময় তাদের মধ্যে অনেককেই আবেগী এবং কান্না করতে দেখা যায়।

ওই হামলায় বেঁচে যাওয়া তোফাজ্জল আলম বলেন, হামলার সময় তিনি লিনউড মসজিদে নামাজ পড়ছিলেন। শুনানিতে অংশ নেয়াকে তিনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেছেন, কেননা হামলায় তার অনেক বন্ধু নিহত হয়েছেন। ট্যারেন্টকে দেখে তিনি হতাশ হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘মনে হয়েছে, সে যা করেছে তার জন্য মোটেও অনুতপ্ত নয়। তার ভেতরে কোনো আবেগ নেই। তাকে দেখে সব ঠিকই আছে মনে হয়েছে। আমি খুবই দুঃখিত। দুঃখিত নিজের জন্য। দুঃখিত হামলায় নিহত আমার বন্ধুদের জন্য এবং তার জন্য।’ এপি, ইউএনবি।