নুসরাতের পরিবারকেই দুষলেন ফেনীর এসপি

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় মামলা করতে পরিবার ‘কালক্ষেপণ’ করেছে বলে দোষারোপ করেছেন ফেনী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জাহাঙ্গীর আলম। ঘটনার পর পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো চিঠিতে তিনি এই অভিযোগ করেন।

এর আগে নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনা নিয়ে ১১ এপ্রিল একটি প্রতিবেদন দেন এসপি। প্রতিবেদনটি পুলিশ সদর দপ্তর, বিশেষ শাখা ও চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজির দপ্তরে পাঠানো হয়।

এদিকে পুলিশ সুপারের চিঠিতে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন নুসরাত মাদ্রাসায় যান। এরপর তার বসার স্থানে ফাইলপত্র রেখে সাইক্লোন শেল্টারের ছাদের ওপরে বাথরুমের কাছে যান। কিছুক্ষণ পর গায়ে আগুন লাগা অবস্থায় সিঁড়ি দিয়ে চিৎকার করতে করতে নেমে আসেন। তখন কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য ও মাদ্রাসার কর্মচারীরা আগুন নিভিয়ে ফেলেন।

ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে পরিবারকে বারবার অনুরোধ করা হলেও তারা মামলা করতে কালক্ষেপণ করে। পুলিশ নুসরাতের চাচাকে বাদী করে মামলা করতে গেলে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান আপত্তি জানান। তিনি দুবার এজাহার বদল করেন।

এ ব্যাপারে নুসরাতের পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘটনাটি এমনভাবে বলা হয়েছে যাতে মনে হচ্ছে, নুসরাত নিজের ইচ্ছাতেই ভবনের ওপরে যান। অথচ তাকে পরিকল্পনা করে ডেকে নেওয়া হয়। এরপর হাত–পা বেঁধে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার কোনো কথাই উল্লেখ করা হয়নি।

এদিকে নুসরাতের পরিবার বলছে, ওসিকে রক্ষায় এমন চিঠি দেওয়া হয়েছে। পুড়িয়ে মারার ঘটনাকে প্রথম থেকেই পুলিশ ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এমনকি মামলার এজাহার নিয়েও পুলিশ কূটচাল চেলেছে।

পুড়িয়ে মারার ঘটনায় পুলিশের দায়দায়িত্ব খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। বুধবার এই কমিটির প্রথম বৈঠক হওয়ার কথা। তবে কমিটি কবে প্রতিবেদন জমা দেবে, সে তারিখ এখনো ঠিক হয়নি।

এদিকে ফেনীর এসপির অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (মিডিয়া) রুহুল আমিন বলেন, ‘সেটা খতিয়ে দেখা হবে। পুলিশ ও নুসরাতের পরিবার দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলা হবে।’

আজ বুধবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, ‘নুসরাত হত্যার ঘটনা তদন্তে পুলিশের কোন গাফিলতি ছিল কি-না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’