বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসে ধর্ষিত পাকিস্তানি স্কুলছাত্রী

মো.নূর আলম, গোপালপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ এবার এক পাকিস্তানী কিশোরী ধর্ষণের শিকার হলো। আর ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে। ছয় মাসের ভিসায় মায়ের সাথে বাংলাদেশে বেড়াতে এসে আপন চাচাতো ভাইয়ের লালসার শিকার হলো সে।

ধর্ষিতা পাকিস্তানের নিউকরাচী শহরের সরকারি এক স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। পিতার নাম হুমায়ুন কবীর, মাতা নীলুফা বেগম। ঠিকানা সুপার হাইওয়েজ রোড়, নিউ করাচী, পাকিস্তান।

গোপালপুর থানার ওসি হাসান আল মামুন জানান, উপজেলার ভেঙ্গুলা গ্রামের বাসিন্দা হুমায়ুন কবীর আনুমানিক পঁচিশ বছর আগে পাকিস্তানের নিউ করাচীতে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। সেখানে পাকিস্তানী নাগরিক করাচীর মেয়ে নীলুফা বেগমকে সাদী করে গামের্ন্টস ব্যবসা শুরু করেন। হুমায়ুন কবীর ও নীলুফা বেগমের বিবাহিত জীবনে একমাত্র কণ্যা সন্তান হলো নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া ওই কিশোরী।

নীলুফা বেগম জানান, দীর্ঘ দিন ধরে মেয়েটি বাবার দেশ দেখার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করে আসছিল। ব্যবসার ঝামেলার জন্য হুমায়ুন কবীর আসতে পারেননি। তবে তিনি স্ত্রী ও কণ্যাকে বাংলাদেশে পাঠানোর যাবতীয় ব্যবস্থা করে দেন।

এমতাবস্থায় স্বামীকে পাকিস্তানে রেখেই পাঁচ মাস আগে ছয় মাসের ভিসায় কণ্যাকে সাথে নিয়ে গোপালপুরে আসেন তিনি। উঠেন উত্তর গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং সম্পর্কে ভাসুর আব্দুল ওয়াদুদের বাড়িতে। বাংলা তেমন বলতে না পারলেও ভালোই কাটছিল দিন মা ও মেয়ের।

কিন্তু কিছু দিন না যেতেই তার কণ্যার উপর কুদৃষ্টি পড়ে আরেক ভাসুর ভেঙ্গুলা গ্রামের আবুল হোসেনের পুত্র বখাটে আল আমিনের। কিশোরীকে রীতিমত উত্যক্ত শুরু করে সে। বেশ কবার শ্লীলতাহানির ও চেষ্টা করে। পারিবারীকভাবে বিষয়টি ফয়সালার চেষ্টা হয়।

এদিকে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় মা ও মেয়ের পাকিস্তানে ফেরত যাবার খবর শুনে বখাটে আল আমীন ক্ষুব্দ হয়। গত ১৬ এপ্রিল রাতে একদল সন্ত্রাসীর সহযোগিতায় হুমেরাকে উত্তর গোপালপুরের কাকার বাড়ি থেকে কৌশলে অপহরন করে নিয়ে যায় সে। এরপর বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে তাকে জোরপূর্বক বারকয়েক ধর্ষণ করে।

এমতাবস্থায় গত ১৭ এপ্রিল আল আমীনসহ তিনজনকে আসামী করে নীলুফা বেগম গোপালপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। গোপালপুর থানা পুলিশ গোপন সুত্রে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার মহিষাকান্দি মোড়ের এক বাসা থেকে আটকাবস্থায় ধর্ষিতাকে উদ্ধার করেন।

ধর্ষিতার মাতা নীলুফার বেগম জানান, তার মেয়ে নিউ করাচীর সরকারি সাদিকাটুল হাইস্কুলে নবম শ্রেণীতে পড়েন। তিনি ও তার মেয়ে বাংলা ঠিক মতো বলতে পারেন না। সখ কওে বাবার দেশে বেড়াতে এসে নিজের পরিজনের হাতেই সর্বনাশের শিকার হলো তার মেয়ে। নির্যাতনে মেয়েটা মুষড়ে পড়েছেন বলে জানান তিনি। এর কঠিন শাস্তি দাবি করেন নীলুফা।

এদিকে তদন্তকারি দারোগা গোপালপুর থানার সাবইন্সপেক্টর আসলাম হোসেন জানান, টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বৃহস্পতিবার দুপুরে ধর্ষিতার মেডিক্যাল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। কিন্তু ধর্ষিতা বাংলা বলতে না পারায় এবং দোভাষী না মেলায় বৃহস্পতিবার আদালতে তার ২২ ধারায় জবানবন্দী নেয়া যায়নি। আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।