ভোটের জেরে ফের সুবর্ণচরে ৫ সন্তানের জননীকে গণধর্ষণ

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট করায় প্রতিপক্ষের লোকজন কর্তৃক ৫ সন্তানের জননী (৩৫) কে গণধর্ষণ অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল ৩১ মার্চ রবিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নির্যাতিতা ওই নারীকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে জানা যায়, গতকাল রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার উত্তর বাগ্গা গ্রামে জাতীয় নির্বাচনে গণধর্ষণ মামলার মূল আসামি সেই রুহুল আমিনের মৎস্য খামারে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে আহত অবস্থায় নির্যাতিতাকে হাসপাতালে আনা হয়।

এ সময় চিকিৎসাধীন নির্যাতিতা নারী অভিযোগ করে বলেন, ‘৩১ মার্চ রবিবার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট চলছিল। তিনি ও তার স্বামী চশমা প্রতীকের প্রার্থী তাজ উদ্দিন বাবরের পক্ষে কাজ করেন। ভোট শেষে সন্ধ্যায় তিনি ও তার স্বামী মোটরসাইকেল যোগে নিজেদের বাড়িতে যাচ্ছিলেন।’

‘পথে তালা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থক ইউসুফ মাঝির নেতৃত্বে ১০/১২ জন তাদের গতিরোধ করে মারধর করে। এ সময় বেচু মাঝি, বজলু ও আবুল বাসার ওই নারীর স্বামীকে আটকে রেখে তাকে পার্শ্ববর্তী রুহুল আমিনের মৎস্য খামারে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। পরে তার স্বামীর চিৎকারে এলাকার লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।’

এ সময় নির্যাতিতা নারী ও তার স্বামী অভিযোগ করে আরও বলেন, ‘ভাইস চেয়ারম্যান পদে তাদের পছন্দের প্রার্থী তাজ উদ্দিন বাবরের চশমা প্রতীকে ভোট দেয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফরহাদ হোসেন চৌধুরী বাহারের সমর্থকরা ভোটের দিন ওই নারী ও তার স্বামীকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।’

‘এতে ভয়ে তারা উপজেলার পশ্চিম চরজব্বার ইউনিয়নে নিজ বাড়িতে না গিয়ে বিকেলে তাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে বাড়িতে থাকা সন্তানদের কথা চিন্তা করে রাত ৮টার দিকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে এই ঘটনার শিকার হন।’

এরপর আজ ১ এপ্রিল সোমবার সকালে খবর পেয়ে চরজব্বার থানার ওসি শাহেদ উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং হাসপাতালে নির্যাতিতাকে দেখতে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক জ্যোতি খিষা।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক জ্যোতি খিষা বলেন, ‘নির্যাতিতার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ সময় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সৈয়দ মহিউদ্দিন আজিম জানান, ওই নারী ধর্ষণের স্বীকার হয়েছেন বলে তাকে জানিয়েছেন। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হবে। গুরুতর আহত ওই নারী ও তার স্বামীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আর ধর্ষণ-সংক্রান্ত পরীক্ষা নিরীক্ষাগুলো আজ করা হবে বলে তিনি জানান।