শরীফের স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে এল নুসরাত হত্যার গোপন তথ্য

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত হত্যার মামলার অন্যতম আসামি আবদুর রহিম শরীফ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানিয়েছে, নুসরাত জাহান রাফিকে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার সময় সাতজনকে সঙ্গে নিয়ে সে মাদ্রাসার গেটে পাহারায় ছিল।

আগুন দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তারা সেখান থেকে চলে যায়। ঘটনার আগের রাতে মাদ্রাসার পাশের পশ্চিম হোস্টেলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত মোতাবেক শামীমের নির্দেশে তারা এ কাজ করে।

গতকাল বুধবার রাতে ফেনীর আদালতে শরীফ এ জবানবন্দি দেয়। এদিন দুপুর আড়াইটা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শারাফ উদ্দিন আহমদের আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

এদিকে ফেনী পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘নুসরাত হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি আবদুর রহিম শরীফকে বুধবার ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।’

এদিকে আদালতে শরীফ স্বীকারোক্তিতে আরও জানায়, নূর উদ্দিনের নেতৃত্বে হাফেজ আবদুল কাদেরসহ মোট সাতজন ঘটনার আগে থেকেই মাদ্রাসার গেটে ছিল। পরিকল্পনামতো শাহাদাত হোসেন শামীমসহ পাঁচজন নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর নুর উদ্দিন তাদের নির্দেশ দেয় অবস্থান ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যেতে। তারপর তারা সেখান থেকে যে-যার মতো চলে যায়।

এর আগে পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল জেলা জজ আদালতে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘নুসরাত হত্যা মামলার অন্যতম আসামি শরীফের দীর্ঘ সময় ধরে দেওয়া জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত অনেক তথ্য উঠে এসেছে। তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে এখন কিছু বলা সম্ভব না। পরে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।’

এদিকে পিবিআইয়ের একটি সূত্রে জানাগেছে, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে শরীফ নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করেছে। জবানবন্দিতে শরীফ বলেছে, অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে যৌন নির্যাতনের মামলা দিয়ে দেশের আলেম সমাজকে হেয় করায় তারা নুসরাতকে কঠিন সাজা দিতে শপথ নিয়েছিল। সেই অনুযায়ী জেলখানায় গিয়ে ওস্তাদের (সিরাজ উদ দৌলা) কাছ থেকে হুকুম পেয়ে সে নুসরাত হত্যায় জড়িত হয়।

এর আগে এ মামলায় গত রবিবার মধ্যরাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয় মামলার অন্যতম আসামী নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম।