বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের আওতায় আসছে বঙ্গোপসাগরের সব মাছ ধরার নৌযান

বঙ্গোপসাগরের সকল মাছ ধরার নৌযানকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে মৎস্য বিভাগ। সমুদ্রে মৎস্য আহরণে নিয়োজিত দশ হাজার যান্ত্রিক নৌযান ও ২৫০টি ইন্ডস্ট্রিয়াল ট্রলারকে এই যোগাযোগের আওতায় আনা হবে।

মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ টেকসই উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ প্রকল্পের অধীনে শুরুতে সমুদ্রে মৎস্য সম্পদের সংরক্ষন ও ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য মৎস্য আহরণে নিয়োজিত প্রত্যেক নৌযানের কর্মকান্ড সম্পর্কে সূনিশ্চিত তথ্য প্রয়োজন। এই জন্য সব নৌযানকে নিজস্ব যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় নিযে আসার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সামুদ্রিক মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক আবুল হাসনাত জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে মৎস্য আহরণে নিয়োজিত ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলারগুলোর জন্য ভিএমএস এবং অন্যান্য নৌযানের জন্য এআইএস চালু করা হবে। এতে সমুদ্রে নৌযানগুলোর অবস্থান, কোন এলাকায় মৎস্যশিকার করছে এইসব তথ্য জানা থাকবে। এইসব নৌযান কোনও দুর্ঘটনার শিকার হলেও প্রয়াজনীয় ব্যবস্থা নিতে সহজ হবে।

তিনি জানান, নৌযানগুলোর সাথে সব সময় সম্পৃক্ত থাকার জন্য ভেসেল মনিটরিং সিস্টেম (ভিএমএস) ও অটোম্যাটিক আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম (এআইএস) নামে দুই ধরনের প্রযুক্তি নির্ধারণ করা হয়েছে।

মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নৌযানগুলোর সাথে যোগাযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে স্যাটেলাইট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলারগুলো নিজ উদ্যোগে এই পদ্ধতি চালু করতে পারবে। তবে, অন্য নৌযানগুলোতে সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি ও প্রশিক্ষন দেওয়ার প্রয়োজন হবে।

বিষয়টি নিয়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কমমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানী লিমিটেডের সহকারি মহাব্যবস্থাপক বখতিয়ার উদ্দিন গনামধ্যমকে জানান, মৎস্য বিভাগের সাথে স্যাটেলাইট ব্যবহার নিয়ে প্রাথমিক অলোচনা হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ভেরি স্মল এপারচার টার্মিনাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে নৌযানগুলোকে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক-এর আওতায় আনা সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ যান্ত্রিক- অযান্ত্রিক নৌযান মালিক সমিতির মহাসচিব আমিনুল ইসলাম বাবুল বলেন, সব ধরনের নৌযানকে যোগাযোগ নেটওয়ার্কে নিয়ে আসা সম্ভব হলে এই ক্ষেত্রে নিয়োজিত মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তা যেমন নিশ্চিত হবে তেমনি পরিকল্পিত মৎস্য আহোরনও সম্ভব হবে।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় পাচ বছর মেয়াদি টেকসই উপকূলীয় সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এ প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮৬৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।