ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ মোকাবেলায় প্রস্তুত সরকার

বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ উপকূলীয় জেলাগুলোতে আঘাত হানার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এঅবস্থায় ‘ফণী’র (সাপের ফণা) টুটি চেপে ধরতে সকল প্রকার পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে সরকার।

এদিকে দুর্যোগ মোকাবিলায় খোলা রাখা হয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সব অফিস। উপকূলীয় ১৯ জেলায় প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোও।

তাছাড়া ঘূর্ণিঝড়টি পর্যবেক্ষণ করে তা মোকাবিলায় ছুটির দিনেও সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান ও মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ্ কামাল এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দপ্তরের কর্মকর্তারা দুর্যোগ প্রস্তুতি সভা করছেন।

এছাড়াও জেলা-উপজেলায় দুর্যোগ প্রস্তুতি সভা করছেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা।

এদিকে আজ বুধবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ্ কামাল বলেন, ‘আমরা শুকনো খাবার ও প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়ে দিয়েছি। ইতোমধ্যে সব জেলায় তা পৌঁছে গেছে। এখন আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।’

আবহাওয়া অফিস সবশেষ বুলেটিনে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৩৫ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৯০ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৯৫ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১০০ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর/উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কি. মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কি. মি.। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কি. মি. পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

এদিকে ভারতের উড়িষ্যা, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে ধেয়ে আসলেও ঘূর্ণিঝড়টির ট্রাক পরিবর্তন হচ্ছে প্রতিদিন। প্রথমে তামিলনাড়ুর দিকে আঘাত করার সম্ভাবনা থাকলেও পরে ডান দিকে মোড় নিয়ে উড়িষ্যার দিকে আঘাতের আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে।

আরও ডান দিকে এলে পশ্চিমবঙ্গের আঘাতের সম্ভাবনা থাকে। তবে আরও ডান দিকে মোড় নিলে সাতক্ষীরা অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। এভাবে আরো ডানদিকে মোড় নিলে কক্সবাজারের দিকে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি প্রতিনিয়ত মুভ করছে। আমরা পুরো উপকূলীয় এলাকাকে সতর্কে রেখেছি।

তাছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে আবহাওয়া অফিস তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলেছে।