যে কারণে কুমিল্লা ছাড়ছেন তামিম

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বশেষ আসরে শিরোপা তুলে নেয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ফাইনালে ঢাকাকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা তোলে তারা। আর এক হাতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ফাইনালে জিতিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। ৬১ বলে ১০ চার, ১১ ছয়ে অপরাজিত ১৪১ রান করে তিনি। তবে চলতি বছরের শেষের দিকে হতে যাওয়া বিপিএলে দেশসেরা এই ওপেনার থাকছেন না কুমিল্লাতে।

কোন কারণে তামিম ইকবাল খুব বেশি খুশি ছিলেন না কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ওপর। অধিনায়কত্ব নিয়ে টানাপোড়েনের কারণে তামিম হতাশ হলেও পেশাদারিত্ব দেখিয়ে পারফর্ম করে গেছেন তামিম ইকবাল।

এদিকে, তামিম-কুমিল্লা ইস্যু নিয়ে ফেব্রুয়ারিতে মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেছিলেন, ‘গত ৬ থেকে ৭ মাস আমি ও তামিম বিপিএলে আমাদের দলের ফরমেশন কেমন হবে সেটা নিয়ে পরিকল্পনা করেছি। কোথায় কোথায় আমাদের বেশি জোর দিতে হবে সেই পরিকল্পনা সাজিয়েছি।’

সবাই জানতেন তামিমই হচ্ছেন কুমিল্লার অধিনায়ক। তবে তামিম যে অধিনায়ক হচ্ছেন না সেটা তামিম জানতে পারেন স্মিথের এজেন্টের কাছ থেকে! যদিও সালাহউদ্দিন খুব কাছ থেকে দেখেছেন প্রিয় শিষ্য তামিম ইকবালকে।অধিনায়কত্ব না পাওয়া তামিমকে খুব বেশি বিচলিত করবে না। এমনকি স্মিথকে অধিনায়ক করার কথা কোচকে ভাবতে বলেছিলেন তামিম। অথচ হুট করে কাউকে না জানিয়ে স্মিথকে অধিনায়ক করাতে ব্যাপারটা হতশ্রী হয়ে যায়।

এবিষয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘সবকিছু নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন হবার আগ অব্দি স্মিথও জানতো তামিম কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক হবেন। এমনকি স্মিথ তামিমকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, সে কি নেতৃত্ব দেবে? সত্যি কথা বলতে অধিনায়কত্বের জন্য ঘুম হারাম করার মতো ছেলে তামিম না। স্মিথ দেশে আসার পর তামিম আমাকে চিন্তা করতে বলেছিল স্মিথকে অধিনায়ক করার ব্যাপারে। কিন্তু টুর্নামেন্টের ঠিক আগে হুট করে স্মিথকে অধিনায়ক করার সিদ্ধান্তে গোটা ব্যাপারটা হতশ্রী হয়ে যায়। আমি এখনো বিশ্বাস করি আমরা যদি ব্যাপারটা ভালভাবে সামলাতে পারতাম তাহলে আমরা আরো গোছানো সাজঘর পেতে পারতাম।’

স্টিভ স্মিথের সাথে যোগাযোগ করতে তামিমই আমাদের সাহায্য করেছে জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘স্টিভ স্মিথের সাথে যোগাযোগ করতে তামিমই আমাদের সাহায্য করেছে। স্মিথকে বাংলাদেশে আনতে ঐ সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে। শুরুতে আমরা সবাই জানতাম তামিমই আমাদের অধিনায়ক। আমরা সেভাবেই আমাদের পরিকল্পনা সাজাচ্ছিলাম। স্টিভ স্মিথের এজেন্টের কাছ থেকে তামিম জানতে পারে যে স্মিথকে অধিনায়ক করা হয়েছে। এটা তামিমের জন্য প্রচন্ড এক ধাক্কা ছিল। তাঁর হতাশ হবার যথেষ্ট কারণ ছিলো। একটা প্রতিযোগিতামূলক স্কোয়াড গড়তে ঘাম ঝরানোর পর হুট করে এমন হওয়াটা অস্বাভাবিক বটে।’

এই হতাশা থেকে পুরোটা আসর জুড়ে তামিমের পারফরম্যান্সের বাটা পড়ে। তবে দিন যতই গড়াতে থাকে তামিম ততই নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন। তার প্রমান মিলেছে ফাইনালে।

এ বিষয়ে সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমি মনে করি টুর্নামেন্টের শুরুতে তামিমের পড়তি পারফরম্যান্সের জন্য এটি অন্যতম কারণ। এমনটা পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই হতে পারতো। ভাগ্য ভাল তেমনটা হয়নি। এতোকিছু হবার পরেও দলের প্রতি তামিম যে উৎসর্জন দেখিয়েছেন তা তামিমের দিক থেকে বড় ত্যাগ। যা কিছু হয়েছে তা যেকারো অহং এ আঘাত করতো, কিন্তু সে এটা কাটিয়ে উঠে দলের জন্য সদয় হয়ে সত্যিকারের পেশাদারিত্ব দেখিয়েছে। যত সময় গিয়েছে সে তাঁর ভেতরের কষ্ট ভুলে সামনে এসেছে। সে মাঠের মধ্যে তাঁর পরামর্শ ইমরুলের সাথে ভাগ করেছেন।’