শিশুর পেটে টিউমারের ভেতর আরেক শিশু!

হঠাৎ করেই বিথিকার শারীরিক পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। পেট হঠাৎ করেই ফুলতে থাকে। ঘাবড়ে যায় পরিবারের লোকজন। সবার ধারণা হয় সে হয়তো কারও দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় স্থানীয় ডাক্তারের কাছে না গিয়ে যায় রংপুরের এক ডাক্তারের কাছে। চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানান বিথিকার পেটে বড় আকারের টিউমার রয়েছে। যা জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করা প্রয়োজন।

দিনমজুর বাবুল রায় রংপুরে অপারেশন করার সামর্থ্য না থাকায় মেয়েকে নিয়ে ঠাকুরগাঁও হাসান এক্স-রে ক্লিনিকে ভর্তি করে ডা. মো. নুরুজ্জামান জুয়েলের শরণাপন্ন হন। ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন হওয়ায় প্রথমে রাজী হননি ডা. জুয়েল। কিন্তু বাবুলের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। অস্ত্রোপচার শেষে টিউমারটি কেটে তার চোখ ছানাবড়া। টিউমারের ভেতরে আরেক শিশুর বসবাস। সেখানে শরীরের হাত, কলিজাসহ নানা অংশ বিদ্যমান।

শুক্রবার বিকেলে অপারেশন করে দেখা যায় শিশুটির পেটে প্রায় চার কেজি ওজনের টিউমার। আর টিউমারের ভেতরে আরেক শিশুর বসবাস। ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের। ওই গ্রামের বাবুল রায়ের ১২ বছরের মেয়ে বিথিকা রায়। স্থানীয় মলানপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সে।

বিষয়টি নিয়ে ডা. মো. নুরুজ্জামান জুয়েল বলেন, মেডিকেল সাইন্সে এটাকে বলে “Fetus in feto” অর্থাৎ বাচ্চার পেটের ভেতরে বাচ্চা। জন্মগতভাবে বিথিকা জমজ। কিন্তু কোনো কারণবশত আরেক শিশু পৃথিবীর মুখ দেখতে পায়নি। এটা বিথিকার জন্মের সময় থেকে তার পেটে থেকে যায়।

তিনি জানান, বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা ভালো। আশা করা যায় আর কোনো ঝুঁকি নেই।