সারা বিশ্বে বোরকা নিষিদ্ধের দাবি তসলিমা নাসরিনের

সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় ইস্টার সানডের দিন জঙ্গি হামলার পর দেশটির নারীদের জন্য বোরকা ও হিজাবসহ মুখ ঢেকে রাখা যায় এমন সব পোশাক নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সারা বিশ্বে বোরকা নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছেন তসলিমা নাসরিন।

গতকাল ২৯ এপ্রিল সোমবার ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন তার ফেসবুকে পেজে এ নিয়ে একটি মন্তব্য পোস্ট করেন। সেখানে তিনি পর্দাপ্রথার বিরোধিতা করে বোরকা নিষিদ্ধ করার দাবি তোলেন।

এর আগেও বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার তিনি বলেছেন, বোরকা নিষিদ্ধ করা উচিত। অবশ্য এমন দাবি জানিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তবে শ্রীলঙ্কায় বোরকা নিষিদ্ধের ঘটনার পর এ নিয়ে নতুন করে মুখ খুললেন তিনি।

ফেসবুক পোষ্টে তিনি লিখেছেন, ‘শ্রীলঙ্কা বোরকা নিষিদ্ধ করেছে, জনমানুষের নিরাপত্তার জন্য। বোরকা পরে আত্মঘাতী বোমা হেঁটে বেড়াচ্ছে, আর আমরা তাকে নিরীহ মেয়ে মানুষ ভেবে তার আশেপাশে নিরাপদ বোধ করছি, এই বোকামোর দিন শেষ হয়েছে।’

‘বোরকা কয়েক ধরনের মানুষ পরে, ১ দোযখে যাওয়ার ভয়ে ধর্ম দ্বারা মগজধোলাই হওয়া মেয়ে। ২. আত্মীয় স্বজনের চাপে বাধ্য হওয়া মেয়ে। ৩. আত্মঘাতী বোমা। ৪. জেল পালানো দাগী আসামি। ৫. ক্রিমিনাল যার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হয়েছে। ৬. চোর। ৭. ডাকাত। ৮. খুনী।’

‘বোরকা পৃথিবীর সব জায়গায় নিষিদ্ধ হওয়া উচিত। বোরকা নিষিদ্ধ হওয়ার পর মেয়েরা মানুষের অধিকার নিয়ে চলাফেরা করতে পারবে। চলমান কারাগারের ভেতর মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়ার শাস্তি ভোগ করতে হবে না।’

‘নাম পরিচয়হীন অবয়বহীন একটি ভুতুড়ে জীবন যাপন করতে হবে না। মেয়েদের জন্য এর চেয়ে বড় সুখবর আর কী হতে পারে! যে মেয়েরা বলে বোরকা পরতে তাদের ভালো লাগে, বা এটা তাদের মানবাধিকার—তারা মগজধোলাই হওয়ার কারণে বলে।’

এর আগে, গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় ইস্টার সানডের দিন ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ও আড়াই শতাধিক মানুষের প্রাণহানির নেপথ্যে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের মদদ থাকার তথ্য উঠে আসার পর সন্দেহ গিয়ে পড়েছে সেখানকার মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর৷

এদিকে সাধারণত মুসলিম নারীদের অনেকে ধর্মীয় রীতি মেনে বোরকা পরেন। কিন্তু শ্রীলঙ্কা প্রশাসন মনে করছে, মুখ ঢেকে রাখার কারণে অপরাধীকে চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়ছে৷ যা এই সন্ত্রাস-পরবর্তী তদন্তের জন্য বেশ কঠিন একটা ব্যাপার। তাই গতকাল সোমবার থেকে দেশটির সরকার নিষিদ্ধ করেছে বোরকা।