১৬০ কি. মি. বেগে বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাত শুরু

বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। জানা গেছে, সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েই বাংলাদেশে আসতে পারে ফণী। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে গতিবেগ কমে এটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকা ঝড় ও বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী আজ সন্ধ্যা ৬টার দিকে যশোর ও খুলনার উপকূলীয় এলাকা দিয়ে ফণীর অগ্রভাগ বাংলাদেশে আঘাত হানতে শুরু করেছে। ঝড়ের প্রভাবে ওই সব এলাকায় ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ‘অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশ বাংলাদেশে ঢুকতে শুরু করেছে। এরই প্রভাবে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এখনও এর গতিবেগ ১৪০-১৬০ কিলোমিটার। তবে মূল ঝড় বাংলাদেশে আসতে আসতে এর গতি আরও কমে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে এটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।’

এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বাতাসের তীব্রতা এবং ধ্বংসক্ষমতা অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়কে চারটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়। ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সৃষ্ট বাতাসের গতিবেগ যদি ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার হয়,তাহলে তাকে ঘূর্ণিঝড় বা ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বলা হয়।

তাছাড়া গতিবেগ ৮৯-১১৭ কিলোমিটার হলে তীব্র ঘূর্ণিঝড় বা প্রবল ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। আর বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১১৮-২১৯ কিলোমিটার হলে সেটিকে হ্যারিকেন গতিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড় বা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। গতিবেগ ২২০ কিলোমিটার বা তার বেশি হলে তাকে ‘সুপার সাইক্লোন’ বলা হয়।

আর এ হিসেবে ঘূর্ণিঝড় ফণীর বর্তমান গতিবেগ আছে ১৪০-১৬০ কিলোমিটার। ফলে ঝড়টি অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়।

আজ শুক্রবার বিকালে ব্রিফিংয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক শামছুদ্দীন আহমেদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশে আঘাত হানার সময় ঝড়ের গতিবেগ ৮০-৯০ কিলোমিটার হতে পারে। তাহলে ঝড়টি বাংলাদেশে আঘাত হানার পর এটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে।’

এদিকে ঝড়ের অগ্রভাগ দেশের যশোর ও খুলনা অঞ্চল দিয়ে ঢুকতে শুরু করলেও চার বন্দরের সর্তক সংকেত বদলানো হয়নি। সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

তাছাড়া উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

এদিকে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায়ই থাকবে।

একই কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৪ স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।