যেসব অনিশ্চিত কাণ্ডে পাল্টে যাচ্ছে বিশ্বকাপে ম্যাচের ফলাফল

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে অনিচ্ছার কাণ্ডগুলোই ঘটে চলেছে। বিশ্বকাপ শুরু আগেই জানা ছিল বৃষ্টি ঝামেলা করবে এবারের আসরটিতে। আর শুরুর বারো দিনের মধ্যেই তিনটি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছে। আর এতেই নতুন রেকর্ড করলো এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপে শেষ হতে এখনো অনেক বাকি। এরই মধ্যে বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে তিনটি ম্যাচ। আগের কোন আসরে এতগুলো ম্যাচ বৃষ্টিতে পন্ড হয়নি।

যদিও কেউ ইচ্ছা করে বৃষ্টি নামায় না। খেলায় কেউ ইচ্ছা করে ক্যাচ ছাড়ে না। আম্পায়াররাও ইচ্ছা করে ভুল সিদ্ধান্ত দেন না। তবে অনিচ্ছার সেই কাণ্ডগুলোই এবারের বিশ্বকাপে ঘটছে বেশি বেশি। ১২ তম এই আসরের প্রথম ১৬ ম্যাচের ভেতরেই মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩টি ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পণ্ড হয়ে গেছে।

এদিকে, এখন পর্যন্ত যে ১৩টি ম্যাচ খেলা হয়েছে, তাতেও আছে ক্যাচ ড্রপ ও আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের আধিক্য। বছরের বাকি সময়ের তুলনায় যা অনেক ক্ষেত্রেই বেশি। ২৬টি ইনিংসের মধ্যে ক্যাচ ড্রপ হয়েছে ২৭টি। প্রতি ইনিংসে একটিরও বেশি! ক্যাচ ড্রপের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে ইংল্যান্ড, সর্বোচ্চ পাঁচটি ড্রপ হয়েছে দলটির।

এবারের প্রতিপক্ষের বাজে ফিল্ডিংয়ের কারণে বেশি লাভবান হওয়ার দলটির নাম ভারত। বিরাট কোহলির দল ক্যাচ আউট থেকে বেঁচে গেছে মোট ছয়বার। যে কারণে তাদের দুটি জয়ের পথও খুলে দিয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১ রানের মাথায় রোহিত শর্মার ক্যাচ ফেলে দিয়েছিলেন ফাফ ডু প্লেসিস। তার হাত থেকে বেঁচে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জেতানো ১২২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হার্দিক পান্ডিয়া প্রথম বলেই বেঁচে গিয়েছিলেন অ্যালেক্স ক্যারির হাত থেকে। পরে তিনি ২৭ বলে ৪৮ রান করেন। অন্যদিকে, ভারত এখন পর্যন্ত একটি ক্যাচও মিস করেনি।

ক্যাচ ড্রপ কাণ্ডে ইংল্যান্ড অবশ্য পাঁচটি ড্রপের বিপরীতে চারবার নতুন সুযোগও পেয়েছে। তবে যোগ-বিয়োগের কাটাকাটিতে একটি ক্ষতি শেষ পর্যন্ত থেকেই গেছে। আর এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা মোটের ওপর ভালো আছে। দু’দলই প্রতিপক্ষের জন্য চারবার ক্যাচ ছেড়েছে, সুবিধাও পেয়েছে চারবার করে। আর আফগানিস্তানও ভারতের মতো একটিও ক্যাচ না ছাড়া মতো আরেক দল। তারা তিনবার আউট থেকে বেঁচেছে।

এবারের বিশ্বকাপে ক্যাচ ধরা আর বেঁচে যাওয়ার অদল-বদলে সুবিধাপ্রাপ্ত অন্য দলটি শ্রীলংকা। একটি মিস করে দুটি জীবন পেয়েছে তারা। আর হিসাবের ঘরে ক্ষতি লেখা আপাতত অস্ট্রেলিয়া (৩ মিস, ১ সুবিধা), নিউজিল্যান্ড (৪ মিস, ০ সুবিধা), পাকিস্তান (৪ মিস, ২ সুবিধা) ও উইন্ডিজের (২ মিস, ১ সুবিধা)।

এতো গেল ক্যাচ ড্রপ কাণ্ড। এবার আম্পায়ারকে ভুল সিদ্ধান্ত। এবার ডিআরএসের দিক থেকে বেশ লাভবান হয়েছে ক্যারিবীয়রা। তারা এখন পর্যন্ত আম্পায়ারদের মোট সাতটি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে পাঁচটিই এসেছে পক্ষে।

২০১৯ বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে আম্পায়ারদের দেওয়া ২৯টি সিদ্ধান্ত ডিআরএসে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে; এর মধ্যে সফল হয়েছে ৯টি; যার অর্থ খেলোয়াড়দের ৩১ শতাংশ ভিন্নমতই সফল। অন্য সব সময়ের তুলনায় যা ১০ শতাংশ বেশি। তবে ডিআরএস চ্যালেঞ্জে আম্পায়ারকে ভুল প্রমাণের দিক থেকে সবচেয়ে বাজে অভিজ্ঞতা হয়েছে আফগানিস্তানের। তাদের নেওয়া পাঁচটি রেফারেলের চারটিই সরাসরি বাতিল হয়েছে, অন্যটিতে আম্পায়ার্স কল হিসেবে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এবার বাংলাদেশ দল তিন ম্যাচে দুটি সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করেছিল। দুটিই সরাসরি বাতিল হয়। আর ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার ডিআরএস চ্যালেঞ্জ বাতিল হয়েছে তিনটি করে। এছাড়া প্রোটিয়াদের আরও দুটি সিদ্ধান্ত বিপক্ষে গেছে আম্পায়ার্স কলের কারণে।

মাত্র একটি করে সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করেছে তিন এশিয়ান দেশ ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকা। তবে ভারতেরটি সফল হলেও বাকিদেরটি সরাসরি বাতিল। আর আম্পায়ারদের মধ্যে ডিআরএসের কারণে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়েছেন বেশি ক্রিস গাফানি। তিনি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচটি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তা চ্যালেঞ্জ করলে তিনটিই ভুল প্রমাণিত হয়। আর ইংল্যান্ডের ইয়ান গোল্ড এবং শ্রীলংকার রুচিরা পালিয়াগুরুগের সিদ্ধান্ত পাল্টেছে দুটি করে।