সাকিবের আঘাত, অবশেষে উইকেট পেল বাংলাদেশ

আম্পায়ারের বিতর্কিত আউটের পরেও ৭ উইকেটে ২৬২ রান তোলে বাংলাদেশ। ২৬৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ধীর গতিতে শুরু করে আফগানিস্তান। এরপরই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসে আফগান দুই ওপেনার। তবে সাকিবের প্রথম ওভারে ৪৯ রানে মাথায় ঝলে ওঠা রহমত শাহ ফিরে যান। ৩৫ বলে ৩টি চার হাঁকিয়ে ২৪ রান করেন তিনি।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আফগানিস্তানের সংগ্রহ ১২.৪ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৫১ রান।

এর আগে বিশ্বকাপে নিজেদের ৭ম ম্যাচে আজ বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। ম্যাচটি শুরু হয় বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩:৪০ মিনিটে। বৃষ্টির কারণে ১০ মিনিটে খেলাটি শুরু হয়। ১০ মিনিটে দেরিতে অনুষ্ঠিত টস জিতে প্রথমে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রন জানিয়েছে আফগানিস্তান।

ব্যাট করতে নেমে শুরু ভালো করলেও দুর্দান্ত এক ক্যাচের ফিরে যান লিটন দাস। মুজিব উর রহমান বলে ২টি চার হাঁকিয়ে ১৬ রান করে ফিলে যান। তবে বলটা মনে হচ্ছিল, মাটিতে লেগেছে। আম্পায়ার কয়েকবার রিপ্লে টেনে টেনে দেখলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আউটের সিদ্ধান্তই দিলেন। মুজিব উর রহমানের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরলেন লিটন দাস। টিভি আম্পারের দায়িত্বে ছিলেন পাকিস্তানে আলিমদার।

এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে এমন বিতর্কিত আউট দিয়েছিলেন তিনি। অথচ লিটনের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। মূলত ওপেনিং জুটিতে তিনিই ভালো খেলছিলেন। এরপর প্রথম থেকে ধীর গতিতে খেলা তামিম তার খোলস ছেড়ে বের হতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত মোহাম্মদ নবীর বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান। ৫৩ বলে ৪টি চার হাঁকিয়ে ফিরে যান তিনি।

এদিকে, এবারের বিশ্বকাপ যেন রেকর্ড গড়ার মঞ্চ হিসেবে বেছে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে একের পর এক রেকর্ড গড়েই চলেছেন তিনি। যার সর্বশেষ সংযোজন বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ব্যক্তিগত ১ হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়া। আফগানিস্তানের বিপক্ষে লিটন দাস তৃতীয় আম্পায়ার আলিম দারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে আউটের পর মাঠে নামেন সাকিব। তামিম ইকবালের সঙ্গে জুটি বাঁধেন ২৩ রান করে। রেকর্ডের পাতায় পা দিয়ে দুর্দান্ত হাফসেঞ্চুরি তুলে নিলেন সাকিব আল হাসান। ৬৩ বলে ১টি চার হাঁকিয়ে অর্ধশকত হাঁকান তিনি।

এর আগে এবারের বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের শীর্ষস্থান দখল করেন তিনি। ৬ ম্যাচে ৪৪৭ রান করা অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারকে পেছনে ফেলে নিজের শীর্ষস্থান ফিরে পান সাকিব। আর সাকিব মাইলফলকটি স্পর্শ করেন ইনিংসের ২১তম ওভারে। দৌলত জাদরানের করা ওভারের শেষ বলে সাকিব বল ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ঠেলে দিয়ে ১ রান নিয়ে ঢুকে যান ইতিহাসের পাতায়।

কিন্তু ৫১ রানের মাথায় মুজিবের বলে এলবির ফাঁদে পড়ে সাকিব। সাকিবের আউটে কিছুটা হলেও বিপদে বাংলাদেশ। এর পর ভুল এক এলবি আউট দিলো সৌম্যকে। মুজিব উর রহমান বলে জোড়ালো আবেদনে আউট দেন আম্পায়ার। পরে রিভিউ নেন সৌম্য। রিপ্লেতে দেখা যায় বল লাইলে বেশ বাইরে এবং লেগ স্ট্যাম্প হালকা লাগে। কিন্তু আম্পায় আউট দেন।

তবে আম্পারের চোখে আঙুল দেখিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে দুর্দান্ত হাফসেঞ্চুরি তুলে নিলেন মুশফিক। ৫৬ বলে ১ ছক্কা ও ২ চারে অর্ধশতক হাঁকান তিনি। অন্য প্রান্তে পায়ের ব্যথা নিয়েই ব্যাটিং চালিয়ে যাচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে রান নিচ্ছেন। তবে সেটা করতে যে বেশ কষ্ট হচ্ছে, বোঝাই যাচ্ছে। আফগান বোলিংয়ের সামনে ব্যাটিংয়ে বেশ সংগ্রাম করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। রান নিতে গিয়ে ডান পায়ের কাফে টান পড়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের।

শেষ পর্যন্ত দেশের জন্য ২৭ রান তুলে গুলবদীন নাঈব বলে নবী হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান রিয়াদ। এরপর ৮৭ বলে ৮৩ রান করে ফিরে যান মুশফিক। তবে মুশফিকের ব্যাটিং ধীরতায় ও শেষ দিকে মোসাদ্দেকের ব্যাটিংয়ে চ্যালেঞ্জিং টার্গেট পায় বাংলাদেশ। ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৬২ রান করে বাংলাদেশ। জিততে হলে ৫০ ওভারে করতে হবে ২৬৩ রান। মোসাদ্দেক করে ২৪ বলে ৩৫ রান।

আফগানিস্তানের মুজিব উর রহমান ৩, গুলবদীন নাঈব ২, দৌলাত জাদরান ও মোহাম্মদ নবী ১টি করে উইকেট পান।