২৭ বছরের ইতিহাস ফিরিয়ে আনলো পাকিস্তান

নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ২৩৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৯ ওপেনা ফখর জামান বিদায় নেন। এরপর ৪৪ রানের মাথায় বিদায় ইমাম উল হক। ৯ রান করে ফখর ১৯ রান করে আউট হন ইমাম উল হক।

তবে চাপ সামলে ম্যাচে দারুণ ভাবে ফিরেছে পাকিস্তান। এরপর হাফিজকে ফিরিয়ে দিলেন উইলিয়ামসন। ৫০ বলে ৩২ রান করেন হাফিজ। হাফিজ ফিরলেও দুর্দান্ত অর্ধশতক হাঁকান বাবর আজম। ৬৫ বলে ৫টি চার হাঁকিয়ে হাফসেঞ্চুরি করেন বাবর।

বাবর আজমের পর দুর্দান্ত হাফসেঞ্চুরি তুলে নিলেন হারিস সোহলে। ৬৩ বলে ২ ছক্কা ও ৩টি চারের সাহায্যে তিনি এই অর্ধশতক হাকান। হাফসেঞ্চুরির পর দুর্দান্ত সেঞ্চুরি উদযাপন করলেন বাবর আজম। ১২০ বলে ১১টি চার হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি উদযাপন বারব। ২ রান বাকি থাকতে রান আউট হন হারিস সোহেল ৭৮ বলে ৬৮ রান করেন তিনি।

শেষ পর্যন্ত ৪৯.১ বলে জিতে যায় পাকিস্তান। বাবর আজম ১২৭ বলে ১০১ রান ও ৩ বলে ৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন সরফরাজ। ৪ উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান করে তারা। ৬ উইকেটে জয় পায় পাকিস্তান।

এ জয়ের ফলে সেমির আশা জাগ্ররত করে রাখলো পাকিস্তান। অন্যদিকে বাংলাদেশের জন্য সেমিতে ওঠতে আরো কঠিণ সমীকরণে পরিনত হল। বাংলাদেশে বাকি দুই পাকিস্তান-ভারতের সঙ্গে। আর পাকিস্তানের অন্য ম্যাচে হবে আফগানিস্তানে সঙ্গে। ফলে দুই দলকেই বাকি দুই ম্যাচ জিততে হবে সেমিতে উঠতে। আর ইংল্যান্ডকে তাদের দুই ম্যাচ হারতে হবে। তবে আজ পাকিস্তান হারলে বাংলাদেশের জন্য সহজ হতো। বাংলাদেশ-পাকিস্তানের পয়েন্ট সমান ৭। এদিকে নিউজিল্যান্ড হারলেও তাদের সেমি অনেকটাই নিশ্চিত।

এদিকে, পাকিস্তানের ঘোরতর আশাবাদী সমর্থকও হয়তো ভাবেনি, ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের সঙ্গে এতোটা মিলে যাবে দেশটির এবারের বিশ্বকাপ যাত্রা। প্রথম সাত ম্যাচ শেষে হুবহু সে বিশ্বকাপের মতোই ফলাফল পেয়েছে পাকিস্তান। যা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে দেশটির সমর্থকদের মনের আশা। বুধবার বার্মিংহামের এজবাস্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিলো পাকিস্তানের জন্য অনেকটা বাঁচা-মরার লড়াই। কারণ হারলেই শঙ্কায় পড়ে যাবে তাদের সেমিফাইনালের টিকিট। অন্যদিকে এ ম্যাচে জিতলেই অস্ট্রেলিয়ার পর দ্বিতীয় দল হিসেবে শেষ চারে পৌঁছে যেত কিউইরা।

কিন্তু নিউজিল্যান্ডের সে লক্ষ্য ছুঁতে দেয়নি পাকিস্তান। বাবর আজম ও হারিস সোহেলের ব্যাটে ভর করে ৬ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে ১৯৯২ সালের চ্যাম্পিয়নরা। অপেক্ষা বাড়িয়েছে নিউজিল্যান্ডের, ফিরিয়ে এনেছে নিজেদের ২৭ বছর আগের ইতিহাস। কিউইদের করা ২৩৭ রানের সংগ্রহ ৪ উইকেট হারিয়ে তাড়া করেছে পাকিস্তান।

আর কাকতালীয় হলেও অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে হওয়া ১৯৯২ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের প্রথম ছয় ম্যাচের ফলাফল ছিলো যথাক্রমে হার, জয়, পরিত্যক্ত, হার, হার ও জয়। এবারও প্রথম ছয় ম্যাচে ঠিক হার, জয়, পরিত্যক্ত, হার, হার ও জয় দেখেছে পাকিস্তান। সেবার প্রথম ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরেছিল ইমরান খানের দল, এবার সরফরাজ আহমেদের দলও ক্যারিবীয়দের কাছেই হেরেছে নিজেদের প্রথম ম্যাচ।

শুধু তাই নয়, ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের সপ্তম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান। সে ম্যাচে জয়লাভ করেই সেমির টিকিট নিশ্চিত করে তারা। এবারও নিজেদের সপ্তম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিতে নিজেদের সেমির আশা বাঁচিয়ে রাখল দলটি। তবে সেবার অংশগ্রহণকারী দল ছিলো ৯টি, এবার হলো ১০টি। তাই পুরোপুরি ফিরে আসবে না ১৯৯২ সালের ইতিহাস। তবু এমন কাকতালীয় ফল পাওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জেতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে পাকিস্তান।