যুবলীগ নেতা খালিদের সহযোগী ইকবালের সুন্দরী নারীরঙ্গের খতিয়ান!

ইকবাল হোসেন জয় যুবলীগ থেকে বহিস্কৃত খালিদ মাহমুদ ভূঁইয়ার একজন অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। চাটুকারিতায় তার মূল পেশা হলেও সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধ উপার্জনের অর্থ বৈধ করতে কয়েকটি ছবিতে প্রযোজকের খাতায় নাম লেখায় ইকবাল। ঢাকাই ছবির নায়ক শাকিব খানের সঙ্গে তাকে বেশি সময় দেখা যায়। এছাড়া পর্দার অন্তরালে সে বিভিন্ন নারীকে ছবিতে কাজ করতে সুযোগ দিবে শাকিব খানের বিপরীতে এমনে নানা অপকর্মে ব্যবহার করে। সমাজের প্রভাবশালী লোকদের কাছে এসব উক্তি নায়িকাদের পাঠিয়ে তাদের ব্ল্যাকমেইল করে এই ইকবাল জয়। তিনি নিজেই বিয়ে করেছেন তিনটি। একজন উঠতি মডেলকে বিয়ে করে তার সঙ্গে ডিভোর্স হলেও এখনো বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাকে ওই মডেলের সঙ্গে দেখা যায়। ওই মডেল তার বিরুদ্ধে তিন চারটি মামলা এবং কলাবাগান থানায় বেশ কয়েকটি ভিডিও করে রেখেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইকবালের একাধিক ফ্ল্যাট এবং বিভিন্ন স্থানে দোকান রয়েছে যার সবকিছুই তার অবৈধভাবে অর্জন করা। ফাঁসিয়ে অথবা খালেদ ভূঁইয়ার প্রভাব খাটিয়ে ভয় দেখিয়ে এসব হাতিয়ে নিয়েছে ইকবাল। নিজের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বা বড় ধরনের কোনো দৃশ্যমান ব্যবসা না থাকলেও ঢাকাই সিনেমার প্রযোজক বনে গেলেন হঠাৎ করে। গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে নিজেকে তাদের ঘনিষ্ঠ প্রমাণ করার চেষ্টা করেন সুচতুর এই ইকবাল হোসেন জয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ইকবাল হোসেন জয়ের সঙ্গে রাজধানীর গুলশানের বিভিন্ন হোটেলে বিভিন্ন সময়ে বহু উঠতি মডেল ও নায়িকার আনাগোনা দেখা যায়। যার সবকিছুই তিনি প্রভাবশালী বিভিন্নজনের মনোরঞ্জনের জন্য সরবরাহ করেন। পরে ঐসব লোকদের ব্ল্যাকমেইলিং করে হাতিয়ে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা। বেশ কয়েক মাস আগে রাজধানীর একটি তারকা হোটেলে এক মডেল নায়িকা তাকে জুতা ছুড়ে মেরেছে বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গনমাধ্যমের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি জানান, তার সঙ্গে ইকবাল জয়ের যোগাযোগ পেশাগত কারণে থাকলেও তিনি তার চরিত্র সম্পর্কে অবগত। বিভিন্ন সময় সুন্দরী মডেলদের নিয়ে এসে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে ইকবাল। তবে তার ফাঁদে পা দেননি তিনি। একাধিক প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তা কেউ ইকবালের উঠতি নায়িকাদের নিয়ে আড্ডা সস্ত্রীক উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। এনিয়েও মিডিয়া পাড়ায় নানান গুঞ্জন রয়েছে। তবে, ২০১৭ সালে তাকে চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি থেকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়। পরে ছাত্রলীগের একজন সাবেক কেন্দ্রীয় নেতার সহযোগিতায় আবার এফডিসিতে প্রবেশের সুযোগ পায় ইকবাল। অপেশাদার একজন প্রযোজকের কারণে চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন অনেকে।

তবে খালিদ মাহমুদ ভূঁইয়া মতো প্রভাবশালী লোকের ছত্রছায়ায় থাকায় তার বিরুদ্ধে এতদিন কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। নিজের চালচলনে আভিজাত্যের কোন ছাপ না থাকলেও সব সময় বিদেশ ভ্রমণ আর তারকা হোটেলে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় ইকবালকে। খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া গ্রেফতারের পর ইকবাল ১২ থেকে ১৩ দিন তার দ্বিতীয় স্ত্রী যাকে ডিভোর্স দিয়েছিলেন তার বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন বলে জানা গেছে। সংকট কিছুটা স্বাভাবিক হলে আবার বেরিয়ে আসেন ইকবাল। এখন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করছেন তা গোপনে রেকর্ড করা সহ ইনফরমার দায়িত্ব পালন করছে ইকবাল।

চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের মতে ইকবাল হোসেনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া অপকর্মের বহু তথ্য উন্মোচিত হবে। চলচ্চিত্র শিল্পকে জিম্মি করে তা ধ্বংসের পথে টেনে আনার পেছনে খালেদ ভূঁইয়া এবং ইকবাল-এর কুশীলব রয়েছে বলেও মনে করেন তারা।

খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার সাথে ইকবাল হোসেন জয়ের যোগসাজশ রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি ভোরের পাতার এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘হাজারো মানুষের সাথেই খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার যোগাযোগ ছিল, তেমনি আমার সাথেও ছিল।’ তবে শাকিব অপুর সংসার ভাঙার পিছনে কোনো ইন্ধন ছিল না বলে দাবি করে ইকবাল হোসেন জয় বলেন, কারো সংসার ভাঙা আর মসজিদ ভাঙা সমান কথা। এরপরই কথা না বাড়িয়ে তিনি একজন অপরাধ বিষয়ক একজন প্রভাবশালী সাংবাদিককে নিজের আত্নীয় পরিচয় দিয়ে ফোনটি তাকে ধরিয়ে দেন। সুত্রঃ ভোরের পাতা