বৈদেশিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সক্ষমতা অর্জন করেছে

সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক অংশীদার। উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রচুর সুযোগ রয়েছে, এ সুযোগকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

রবিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ডের সাথে মতবিনিময়ের সময় তিনি এসব কথা বলেন।

টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের জন্য ট্যাক্সসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। বাংলাদেশ সুইজারল্যান্ডের জন্য লাভজনক বিনিয়োগ স্থল হতে পারে। সুইজারল্যান্ডের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী দল বাংলাদেশ সফর করলে ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পরিবর্তনশীল বিশ্ব-বাণিজ্য পরিস্থিতিতে চীন থেকে আমেরিকা, জাপানসহ অনেক দেশ তাদের শিল্প কলকারখানা রিলোকেশনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। দেশগুলো বাংলাদেশকে এখন বিনিয়োগের উপযুক্ত স্থান মনে করছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগের আনুষ্ঠানিকতা সহজ ও দ্রুত করার পদক্ষেপ নিয়েছে। অতি সহজেই বাণিজ্য করার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। বিনিয়োগের জন্য এখন বাংলাদেশ উপযুক্ত স্থান।

এসময় সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড বলেন, সুইজারল্যান্ড বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দেয়। বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে সুইজারল্যান্ড প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। উভয় দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে এবং বাণিজ্য সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। ফার্মাসিটিক্যাল এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রচুর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

এসময় উভয় দেশের মধ্যে একটি বৈঠক করার প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, এতে করে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্র চিহ্নিত করা সহজ হবে। করোনা মোকাবেলা এবং করোনাকালে রফতানি বাণিজ্য অব্যাহত রাখার প্রশংসা করে বলেন, বৈদেশিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক সক্ষমতা অর্জন করেছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশের রফতানি আয়ের প্রায় ৮৩ ভাগ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। সরকার রফতানি খাতের পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধি করতে কৃষিজাত পণ্য, ফার্মিাসিটিক্যাল, চামড়াজাত পণ্য, আইসিটি, পাটজাত পণ্য সেক্টরকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। বাংলাদেশের প্রচুর দক্ষ জনশক্তি রয়েছে। এছাড়া, সেবা খাতেও বাংলাদেশের প্রচুর দক্ষ জনশক্তি রয়েছে। সুইজারল্যান্ড চাইলে তা ব্যবহার করতে পারে। জাপানের বিখ্যাত মিতশুবিসি এবং ভারতের টাটা কোম্পানি বাংলাদেশে গাড়ি তৈরি কারখানা স্থাপনের চিন্তা করছে। ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (এফডিআই) আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশ কোম্পানি আইন সময়োপযোগী করাসহ ব্যবসা সহজীকরণের অন্যান্য সূচকেও প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন করেছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সুইজারল্যান্ডে রফতানি করেছে ১০৬.৮৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে আমদানি করেছে ২৭০.৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বাংলাদেশ ১০৬.৮৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করেছে এবং জুলাই-মার্চ সময়ে আমদানি করেছে ২৪৫.১৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। আগামী নভেম্বর মাসে বাংলাদেশের সাথে সুইজারল্যান্ডের বাণিজ্য বৃদ্ধি ও বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠানে একমত পোষণ করা হয়।