ব্রিটেনে মসজিদে টিকার আয়োজন, উদ্যোগে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন মুসলিমরা

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিশ্বজুড়ে চলছে টিকাদান কর্মসূচি। কিন্তু টিকা দেয়া ও নেয়া নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা জটিলতাও রয়েছে। এই দ্বিধাদ্বন্দ্ব দূর করতে যুক্তরাজ্যে নেয়া হয়েছে এক দারুণ পদক্ষেপ, ব্রিটেনের বেশ কিছু মসজিদে ভ্যাকসিন প্রয়োগের কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এমন উদ্যোগে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন মুসলিমরা।

কোভিডের টিকা হালাল কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন জাগে ৬০ বছর বয়সী ব্রিটিশ নাগরিক শেহনাজ সাজানের। কিন্তু তার ধারণা ভুল পরবর্তীতে বুঝতে পারেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে শেহনাজ বলেন, কোভিড ভ্যাকসিনের বিষয়ে অনেক পর্যালোচনা করে দেখেছি। মসজিদ ছাড়াও বিভিন্ন জায়গা থেকে আমি দিক নির্দেশনা পেয়েছি, এই টিকা হালাল এবং ব্যবহারযোগ্য। মসজিদের মতো পবিত্রস্থানে টিকা নেয়া দারুণ অনুভূতি।

গত জানুয়ারি ২১ তারিখ থেকে ব্রিটেনের বার্মিংহামে শেহজানের মতো আরও একাধিক মানুষ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের জনসংখ্যার এক কোটি ২০ লাখ মানুষ ইতিমধ্যে টিকার প্রথম ডোজ সম্পন্ন করেছেন।

টিকা শুধু হাসপাতাল বা নির্দিষ্টস্থানেই দেওয়া হচ্ছে না। সব শ্রেণির মানুষের কথা মাথায় রেখেই সিনেমা হল, লন্ডনের ফুটবলের মাঠ এমনকি মন্দিরেও টিকাদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এমন উদ্যোগে প্রশংসা কুঁড়াচ্ছে ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবার সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্টরা।

আল-জাজিরা তাদের খবরে বলেছে, স্থানীয় সময় রোববার (০৭ জানুয়ারি) ব্রিটেনের হোয়াইট চ্যাপেল এলাকায় ইস্ট লন্ডন মসজিদে টিকা নিয়েছেন শতাধিক মুসল্লি। অন্যদিকে বার্মিংহামের আল-আব্বাস ইসলামিক সেন্টারেও টিকা দেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য একসঙ্গে দু’জনকে টিকা দেয়া। মসজিদ কমিটিও আশাবাদী সামনে পাঁচ শতাধিক মুসল্লিকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা।

আল-আব্বাস মসজিদের ইমাম নুরু মোহাম্মদ বলেন, টিকা নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে যে ভয় ও ভ্রান্ত তথ্য লুকিয়ে ছিল তা দূর করতেই এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ভ্যাকসিনের বিষয়ে যাদের মধ্যে সুস্পষ্ট ধারণা নেই সেসব লোকদের সহায়তা করতেই মসজিদে ছোট করে ক্লিনিক বসানো হয়েছে।’

ইমাম নুরু সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে আরও বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত এই কারণে, সাধারণ মানুষ খুবই আগ্রহের সঙ্গে টিকা নিতে আসছেন। আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। আমার ভাই-বোনদের বলতে চাই, যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা কর্মীদের ওপর ভরসা রাখুন।

যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, জাতিগত সংখ্যালঘু লোকদের মাঝেই ভ্যাকসিনে ইস্যুতে দ্বিধাদ্বন্দ্ব বেশি। বিশেষ করে করোনার টিকা নেওয়ার প্রবণতা খুবই কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে এশীয় কৃষ্ণাঙ্গ এবং অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘু ব্রিটিশরা। কিন্তু মহামারি মোকাবিলার সবার সম্মিলতি প্রচেষ্টার কোনো বিকল্প নেই বার বার বলে আসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।