মানবতাবিরোধী অপরাধে তিনজনের যাবজ্জীবন, পাঁচজনের কারাদণ্ড ২০ বছর

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে পাঁচজনকে ২০ বছরের কারাদণ্ড এবং একজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা পৌনে ১২টার দিকে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান মো. বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ রায় ঘোষণা করা হয়। সদস্য বিচারপতিরা হলেন আমির হোসেন ও আবু আহমেদ জমাদার।

এ মামলার নয় আসামির মধ্যে একজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত রায় আসা ৪২টি মামলার ১১৪ জন আসামির মধ্যে এই প্রথম কেউ বেকসুর খালাস পেলেন। খালাস দেওয়া হয়েছে আসামি আবদুল লতিফ।

রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর মো. মোখলেসুর রহমান বাদল গণমাধ্যমকে বলেন, এটিই প্রথম মামলা যেখানে একজন আসামিকে খালাস দিলেন ট্রাইব্যুনাল। আর এটিই প্রথম মামলা যেটিতে কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যার মত অপরাধের চারটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

মামলার নয় আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা পাঁচজনকে সকাল পৌনে ৯টায় ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নিয়ে আসা হয়। পরে তাদের এজলাসে হাজির করে দূরত্ব বজায় রেখে বসানো হয়। আদালতের নির্দেশে তারা একে একে নিজেদের নাম বলেন।

এ মামলার আসামিদের মধ্যে গ্রেফতার মো. খলিলুর রহমান মীর, মো. শামসুজ্জামান ওরফে আবুল কালাম, মো. আব্দুল্লাহ, মো. রইছ উদ্দিন আজাদী ওরফে আক্কেল আলী ও আব্দুল লতিফ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।তবে এ এফ এম ফয়জুল্লাহ, আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল, সিরাজুল ইসলাম তোতা পলাতক রয়েছেন।

তবে রায়ের দিন সকালে পলাতক এক আসামি আলিমুদ্দিন খান ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রায় ঘোষণার পর সে আসল আসামি কিনা যাচাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ তাদের বিচার শুরু হয়। বিচারকাজ শেষ হয় গতবছরের ২৬ জানুয়ারি।

২০১৪ সালের ১৬ অক্টোবর মামলার তদন্ত শুরু হয়ে ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি শেষ হলে ২০ ফেব্রুয়ারি প্রসিকিউনে জমা হয়। তদন্তে ৬০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হলেও ২৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল। এছাড়া জব্দ তালিকার সাক্ষী ছিলেন আরও দুজন। তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ (আইও) মোট ১৮ জন সাক্ষী দেন আদালতে। ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি মামলাটি রায়ের জন্যে সিএভি অপেক্ষমান রাখেন আদালত। আজ রায় ঘোষণা হলো। সূত্রঃ যুগান্তর