ভারতে সংক্রমণ বাড়ায় চিন্তিত মোদি, বসছেন জরুরী বৈঠকে

ভারতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ আবার বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক ডেকেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশের ২৮টি রাজ্য এবং ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি।
আগামীকাল বুধবার (১৭ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে ওই বৈঠক হবে বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা।

পত্রিকাটি তাদের প্রতিবেদনে জানায়, কয়েকদিন আগেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন বলেছিলেন, দেশ এখন কোভিড যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে। মন্ত্রীর সেই মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল ভারতীয় চিকিৎসা সংগঠন আইএমএ। তারা বলেছিল, দেশবাসীর মনে এমন ধারণা না দেওয়াই ভাল। এ ব্যাপারে সরকার এবং মন্ত্রীদের সতর্ক থেকে কথা বলতে বলেন তারা। সেই বার্তার কিছুদিনের মধ্যেই দেশে বাড়তে থাকা করেনা সংক্রমণ নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক ডাকলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

দেশের সব মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে এই জরুরি ভিত্তিতে বৈঠকের কারণ গত কয়েক দিনের দৈনিক করোনা সংক্রমণের পরিসংখ্যান। বছরের শেষ দিকে যেখানে গড়ে প্রতিদিন ১০ হাজার করে সংক্রমণ হচ্ছিল, সেখানে গত কয়েক দিনে হঠাৎই তা দ্বিগুণ হয়ে তিন গুণের দিকে এগোতে শুরু করেছে।

এদিকে গতকাল সোমবার (১৫ মার্চ) ভারতের দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার ২৯১ এ। যা গত ৮৫ দিনে সর্বোচ্চ। এরই মধ্যে দৈনিক মৃত্যুসংখ্যাও বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে ১১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। অবনতি হয়েছে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার হারও।

সরকারি হিসেব অনুযায়ী প্রতি ১০০ জন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠছেন ৯৬ থেকে ৯৭ জন। সুস্থ হয়ে ওঠার এই হার মাঝে আরও বেশি ছিল। এ ছাড়া দেশের সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ১৯ হাজার ২৬২। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, দেশে টিকাকরণ চালু হওয়ার পরও এই হঠাৎ বেড়ে যাওয়া করোনা সংক্রমণের হার তাই চিন্তায় ফেলেছে কেন্দ্রকে।

সরকারি হিসেব অনুযায়ী, মূলত পাঁচটি রাজ্যে ক্রমশ বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণের সংখ্যাই এই সংক্রমণ বা়ড়ার কারণ। তালিকায় প্রথমেই রয়েছে মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, কর্নাটক, গুজরাট এবং তামিলনাড়ু। দেশের মোট সংক্রমণের ৭৮ দশমিক ৪১ শতাংশ এই পাঁচ রাজ্যেই। যার মধ্যে শুধু মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ সংখ্যা দেশের মোট সংক্রমণের ৬৩ শতাংশ।

করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আটকাতে মরিয়া মহারাষ্ট্র ইতোমধ্যেই বেশ কিছু শহরে লকডাউন ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি মহারাষ্ট্র জুড়েই লকডাউন ঘোষণা করার ‘ভয়’ও দেখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে।

এই পাঁচ রাজ্য ছাড়াও মধ্যপ্রদেশ, দিল্লি এবং হরিয়ানায় নতুন করে সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী। সেক্ষেত্রে এই রাজ্যগুলো নিয়ে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কোনও বিশেষ নির্দেশ জারি করবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।