ভিক্ষুকদের টাকা হাতিয়ে নিলেন চেয়ারম্যানসহ ৩ ইউপি সদস্য

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ঝাঁপা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও তার পরিষদের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে সরকারি ঘর পাইয়ে দেয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তারা দুস্থ, অসহায় ও ভিক্ষুকদের মতো প্রান্তিক পর্যায়ের সাড়ে তিন শতাধিক মানুষের কাছ থেকে জনপ্রতি পাঁচ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জনপ্রতিনিধিরা। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন, তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঝাঁপা বাঁওড়ের তীরবর্তী বাগেরালী গ্রামের জীর্ণ একটি ঘরে বসবাস রেবেকা বেগমের। সেখানেই অসুস্থ স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে খোলা পরিবেশে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। ২০ ফুট লম্বা ও ১০ ফুট চওড়া ঘরের ছাউনির এক পাশের খাটটিতে সন্তানকে রেখে পাশের অংশে মাটিতে মাদুর বিছিয়ে রাত্রিযাপন করেন তারা। আশ্রয়ণ-২ জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ঘর দেয়া হবে বলে তার কাছে প্রস্তাব নিয়ে আসেন স্থানীয় মেম্বার আব্দুর রশিদ। রেবেকা তার ও ছেলের নামে ঘরের জন্য সুদে ২০ হাজার টাকা এনে মেম্বারকে দেন। এরপর কেটে গেছে তিন বছরেরও অধিক সময় কিন্তু ঘর মেলেনি তাদের ভাগ্যে।

কেবল রেবেকা নয় তার মত দরিদ্র শত শত নারী পুরুষের কাছ থেকে ঘর দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন চেয়ারম্যান সামছুল হক মন্টু, নারী ইউপি সদস্য লাকী খাতুন, শাহিনারা খাতুন, ইউপি সদস্য ইউছোপ আলী, আব্দুর রশিদ এবং ইউনিয়নের নারী উদ্যোক্তা ডলি খাতুন। তাদের প্রতারণার শিকার হয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন হতদরিদ্ররা।

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঝাঁপার ইউপি সদস্য লাকী খাতুন ও চেয়ারম্যান সামছুল হক মন্টু। তাদের দাবি নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্র করছে।

আর মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান জানান, অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ পেয়েছেন। অভিযোগের সত্যতা পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য মতে ঝাঁপা ইউনিয়নে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আশ্রয়ণ-২ জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পের আওতায় ১০৩টি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল, যা ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে।