মহামারির মতো মুসলিমদের প্রতি বৈষম্য বাড়ছে: জাতিসংঘ মহাসচিব

মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষ ও বর্ণবৈষম্যমূলক আচরণ মহামারি পর্যায়ে বৃদ্ধি পাওয়ার কথা জানিয়ে নিজের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। আর বর্ণবৈষম্যমূলক আচরণ প্রতিরোধে সব দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অধিকার ‍সুরক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল বুধবার (১৭ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি) আয়োজিত ‘ইসলাম ফোবিয়া প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক দিবস’ শীর্ষক এক বিশেষ বৈঠকে তিনি একথা বলেছেন।

মুসলিমবিশ্বের সর্ববৃহৎ সংগঠন ওআইসি প্রতি বছর ১৫ মার্চ ‘ইসলামফোবিয়া প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক দিবস’ উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। নিউজিল্যান্ডে ক্রাইস্টচার্চের মসজিদ হামলায় ৫১জন মুসল্লির প্রাণহানি ঘটনায় সংহতি প্রকাশ করে আন্তর্জাতিকভাবে দিনটি ইসলামফোবিয়া প্রতিরোধ দিবস হিসেবে উদযাপন করতে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে ওআইসি আহ্বান জানায়। এরই মধ্যে গত সোমবার (১৫ মার্চ) বিশ্বে প্রথম বারের মতো ওআইসির সদস্য রাষ্ট্র পাকিস্তান দিবসটি উদযাপন করেছে।

গত বছরের নভেম্বরে নিয়ামির নাইজারে অনুষ্ঠিত ওআইসি সদস্যভূক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৭তম সম্মেলনে সর্বসম্মতিক্রমে ১৫ মার্চ ‘ইসলামফোবিয়া প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক দিবস’ হিসেবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তুরস্ক ও পাকিস্তান এ প্রস্তাবনা উত্থাপন করেছিল।

ভিডিও যোগে প্রদত্ত বক্তব্যে জাতিসংঘ মহাসচিব কিছু দিন আগে মানবাধিকার পরিষদে দাখিল করা প্রতিবেদন সম্পর্কে বলেন, তিনি তাতে মুসলিমদের প্রতি সংশয়, বৈষম্য ও বিদ্বেষের হার মহামারি পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে উল্লেখ করেছেন। এতে তিনি মুসলিমদের বিশ্বাস প্রকাশে বাধা, ধর্মীয় সমাজের নিরাপত্তা ঝুঁকি, নাগরিকত্ব গ্রহণে বিধি-নিষেধ আরোপ ও সামাজিক-অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কথা তুলে ধরেন।

মানবাধিকার ও মানুষের বৈচিত্রপূর্ণ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পরিচয় ধারণে পবিত্র কোরআনের নীতিমালা অনুসরণে আহ্বান জানিয়ে আন্তোনিও গুতেরেস এই অংশটুকু পাঠ করেন, ‘আমি তোমাদেরকে অনেক জাতি ও গোষ্ঠী করে সৃষ্টি করেছি যেন একে অপরের পরিচয় লাভ করতে পার।’ (সুরা হুজরাত, আয়াত : ১৩)

জাতিসংঘ মহাসচিব আরো জানান, মুসলিম নারীরা নিজেদের ধর্ম, বর্ণ ও দেশ মোট তিন ধরনের বৈষম্যের শিকার হন। এছাড়া অনেক সময়ই এসব বাধা-বিপত্তি সংবাদ মাধ্যম ও ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের কারণে বাড়তে থাকে।

সূত্র: জাতিসংঘের ওয়েবসাই