শিক্ষার্থীকে নির্যাতিত করায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করছে সরকার

অনেক নাটকীয়তার পরও ছাড় পাচ্ছেন না মাদরাসার সেই শিক্ষক। এবার তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হচ্ছে। মাদরাসার শিশু শিক্ষার্থীকে বেদম মারধর করেন ইয়াহইয়া নামের ওই শিক্ষক। যে ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

এরপরেই সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে ধরে নিয়ে আসে প্রশাসন। তবে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন প্রকার লিখিত অভিযোগ করতে চায়নি ছাত্রটির পরিবার। উল্টো তারা সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে ছেড়ে দিতে লিখিত আবেদন জানান। যার প্রেক্ষিতে শিক্ষককে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে, তার কৃতকর্মের জন্য তিনি ছাড় পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ রুহুল আমীন।

এবার তার বিরুদ্ধে খোদ সরকারই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করার চিন্তা করছে। ইতোমধ্যে এই মামলা দায়েরের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউএনও রুহুল আমীন।

আজ বুধবার (১০ মার্চ) দুপুর ১২ টায় পর্যন্ত ওই শিক্ষার্থীর বাবা-মাকে আমারা বুঝিয়েছি- সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের জন্য। কিন্তু কিছুতেই তারা অভিযোগ দায়ের করতে চায়নি। উল্টো আমাদের হাতপায়ে ধরে তারা ওই শিক্ষককে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতে আমরা সরকার বাদী হয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিয়েছে। মামলা দায়ের হলেই তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

এদিকে ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর রাত দেড়টার দিকে মাদরাসা থেকে শিশু শিক্ষার্থীটিকে উদ্ধার করেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন। আটক করা হয় নির্যাতনকারী শিক্ষক হাফেজ ইয়াহইয়াকেও।

রুহুল আমিন জানান, নির্যাতনের শিকার শিশুটির পরিবারের অনীহার কারণে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। তবে লিখিত আবেদনে শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, হিফজ বিভাগের শিক্ষক তাকে ধরে এনে বেদম প্রহার করে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ। উক্ত ঘটনায় আমরা বাবা-মা দুজনই মর্মাহত এবং ক্ষুব্ধ হয়েছি। তথাপি আমার সন্তানের শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমরা কোনো আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করব না। এমতাবস্থায় আটক শিক্ষককে ছেড়ে দেয়ার বিনীত আবেদন করা হলো।

রুহুল আমিন বলেন, শিশুর বাবা-মা কিছুতেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে চায়নি। তাদের বক্তব্য, এতে শিক্ষকের অমর্যাদা হবে, শিক্ষক সামাজিকভাবে হেয় হবে। এভাবে অভিযোগ দিতে চাই না, আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম।