১০ হাজার টাকার গুজবে টাঙ্গাইলে হুমড়ি খেয়ে রেজিস্ট্রেশন

শিক্ষার্থীদের ১০ হাজার করে টাকা দেবে সরকার- এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় টাঙ্গাইলের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হুমড়ি খেয়ে রেজিস্ট্রেশন করছেন শিক্ষার্থীরা। কলেজ থেকে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করতে দুই টাকার ফটোকপি ফরম ১০০ টাকা বিক্রি করলেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।

তবে সরকার কর্তৃক সব শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত কোনো অঙ্কের টাকা দেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা যাতে প্রতারিত না হন, সে ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা খানম দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

১০ হাজার টাকা পাওয়ার ভিত্তিহীন খবর অনুযায়ী রোববার (৭ মার্চ) আবেদনের শেষ দিন। তাই টাঙ্গাইল কুমুদিনী সরকারি কলেজ, শেখ ফজিলাতুন্নেসা মহিলা কলেজসহ বিভিন্ন কলেজে ফরম পূরণে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।

জেলার বিবেকানন্দ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ গোবিন্দ মোহন দে জানান, শিক্ষার্থীরা এসে প্রত্যয়নপত্র নিয়ে যাচ্ছে, আমরা দিচ্ছি। তবে, মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কোনো নিদের্শনা দেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।

এদিকে এমন গুজবে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত না হতে সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রোববার (৭ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী, ছাত্রছাত্রীদের অনুদান দিচ্ছে সরকার। এ জন্য অনলাইনে আবেদনও নেওয়া হচ্ছে। তবে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী, ছাত্রছাত্রীদের অনুদান দেওয়া হবে এমন কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। এই বিষয়ে কোনো ধরনের গুজবে কান না দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রীদের অনুদান প্রদানের সংশোধিত নীতিমালা ২০২০ অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী, ছাত্রছাত্রীদের অনলাইনে (www.shed.gov.bd) আবেদন আহ্বান করা হয়েছে। আজকে (৭ মার্চ) আবেদনের শেষ দিন। তবে কর্তৃপক্ষ আবেদনের সময় বাড়ানোর বিষয়ে চিন্তা করছে।

অনুদানের এই ঘোষণা ইতোমধ্যে দেশজুড়ে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। ১০ হাজার টাকা করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে অনুদান দেওয়ার গুজব ছড়িয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকরা। জানা গেছে, বিভিন্ন প্রতারকচক্র অনলাইনে আবেদনের জন্য গুগল ডকে ফর্ম ফিলাপ করতে বলছে। সেখানে ব্যক্তিগত তথ্যসহ বিকাশ ও অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বর ও পিনসহ গোপন তথ্য চাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ প্রতারণা।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশেষ অনুদান বিষয়ে কাউকে ফোন দেওয়া হয়নি এবং জাতীয় পরিচয়পত্র, বিকাশ নম্বর ও গোপন পিন সংক্রান্ত কোনো তথ্যও চাওয়া হয়নি। এ বিষয়ে প্রতারক চক্র থেকে সতর্ক থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রীদের অনুদান প্রদানের গত ১৮ ফেব্রুয়ারি একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে টাকার পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়া সংশোধীত নীতিমালা অনুযায়ী সবাই আবেদনের যোগ্যও না।