ইসরায়েলকে টিকিয়ে রাখতে মার্কিনীদের দৌড়ঝাঁপ, গাজা পুনর্গঠনের নামে নতুন ষড়যন্ত্র

গাজায় ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে দখলদার ইসরায়েলের যুদ্ধ বিরতি ঘোষণার চারদিন পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থনি ব্লিংকেন গতকাল ইসরাইল সফরে এসেছেন। তেলআবিব পৌঁছে তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এরপর তিনি ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য রামাল্লা গেছেন। মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি প্রথমে মিশর এরপর জর্দান সফরে যাবেন বলে কথা রয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছেন, চলমান যুদ্ধবিরতি টিকিয়ে রাখা এবং গাজা পুনর্গঠনের বিষয়ে আলোচনা করাই তার এই সফরের লক্ষ্য। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে মার্কিন কর্মকর্তারা আসলে গাজা পুনর্গঠনের কথা বলে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল-মার্কিন ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। কেননা সম্প্রতি ১২ দিনের যুদ্ধে দখলদার ইসরায়েল শোচনীয়ভাবে পরাজিত হওয়ার পর তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে পাশ্চাত্যের কর্মকর্তারা যুদ্ধবিরতি টিকিয়ে রাখা এবং আবারো যাতে সংঘাত শুরু না হয় সেজন্য তারা মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু করেছেন। ইসরায়েল ও তাদের পাশ্চাত্য মিত্ররা গোপন লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য মিশর ও জর্দানের উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করেছেন।

ধারণা করা হচ্ছে ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক পরিকল্পনার কথা বলে মার্কিন সরকার আসলে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠনগুলোকে এ ক্ষেত্রে বড় বাধা হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে এবং এ অজুহাতে তারা এই সংগঠনগুলোর উপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনের জনগণকেও গাজার হামাসসহ অন্যান্য প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে উস্কানি দেয়ার চেষ্টা করছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গাজা পুনর্গঠনের ওপর জোর দিয়েছেন যদিও গাজায় ধ্বংসযজ্ঞের জন্য ইসরায়েলই দায়ী। নেতানিয়াহু গাজা পুনর্গঠনে সহযোগিতার জন্য কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন হামাসকে নিরস্ত্র হতে হবে এবং তাদের হাতে আটক চার ইসরায়েলিকে ছেড়ে দিতে হবে।

এদিকে, ফিলিস্তিনিদের জনমত স্বশাসন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চলে যাওয়ায় দখলদার ইসরায়েল ও তার মিত্ররা আসন্ন নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আরো বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক যুদ্ধে ইসরায়েল পরাজিত হয় জনমত আরো বেশি প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর দিকে ঝুঁকে পড়েছে যা ইসরায়েলের জন্য খুবই চিন্তার বিষয়। এ কারণে ইসরাইলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য মার্কিন কর্মকর্তারা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।

সূত্রঃ পার্সটুডে