একসাথে জন্ম নেয়া ৯ ভাইবোন ২ সপ্তাহ পর এখনও সুস্থ!

মরক্কোর হাসপাতালে একসাথে জন্ম নেয়া ৯ ভাইবোন এখন পর্যন্ত সুস্থ আছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় তাদের নিবিড় পরিচর্যা চলছে ক্লিনিকে। অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেয়া শিশুদের স্থিতিশীল রাখতে রীতিমতো লড়াই করতে হচ্ছে ডাক্তার-নার্সদের। তাদের চেষ্টা সফল হলে আধুনিক পৃথিবীতে এটাই হবে একসাথে জন্ম নেয়া ৯ শিশু বেঁচে থাকার প্রথম ঘটনা।

বিশেষ যত্নের জন্যই সন্তানসম্ভবা ২৫ বছর বয়সী হালিমা সিসেকে মরক্কো পাঠিয়েছিল মালির সরকার। ৩০ সপ্তাহ গর্ভধারণের পর সেখানেই সিজারিয়ান অপারেশনে একসাথে জন্ম নেয় ৫ কন্যা ও ৪ পুত্র সন্তান।

মরক্কোর ক্যাসাব্লাঙ্কার আইন বোর্জা ক্লিনিকের পরিচালক ইউসেফ আলাউয়ি বলেন, কেবল এই ক্লিনিকের জন্যই নয়, সমগ্র মরক্কোর জন্য এটা গর্বের। বাচ্চাগুলোর সুস্থতা নিশ্চিত করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের সার্বক্ষণিক প্রার্থনা ওরা প্রত্যেকে বেঁচে থাকুক।

প্রতিটি শিশুই জন্ম নিয়েছে অপরিণত অবস্থায়। জন্মের সময় ওজন ছিলো ৫০০ গ্রাম থেকে ১ কেজির মধ্যে। এখনও পর্যন্ত স্থিতিশীল প্রত্যেকের শারীরিক অবস্থা। তবে যেকোনা সময় যেকোনো কিছু ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

আইন বোর্জা ক্লিনিকের শিশু বিশেষজ্ঞ খলিল মোসাইফ বলেন, তারা পরিণত শিশু নয়। সবকিছুরই ঘাটতি রয়েছে। ফুসফুস, মস্তিষ্ক, হৃদযন্ত্র প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গই এখনও তৈরি হয়নি।

এর আগে একসাথে ৯ শিশু জন্মের মাত্র দু’টি ঘটনা জানা যায়। কিন্তু জন্মের কিছুদিনের মধ্যেই মৃত্যু হয় সব শিশুর। বাচ্চাদের ৬ জনের শারীরিক অবস্থা বেশ ভালো। তিনজনের জটিলতা কিছুটা বেশি। কোনো কোনো দিন তারা সুস্থ থাকে, কখনও আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে। তবে চিকিৎসকরা আশাবাদী। এরই মধ্যে পার হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ দুই সপ্তাহ। অলৌকিক কিছুর প্রত্যাশায় নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছেন ডাক্তার-নার্সরা।

আইন বোর্জা ক্লিনিকের হাসপাতালের নার্স সৌমায়া আরকুবি বলেন, সব নার্স, কর্মীরাই পালাক্রমে শিশুদের সাথে কাটাই। তাদের মায়ের মতোই সবাই ভালোবাসে। একটি শিশুরও যদি গুরুতর জটিলতা দেখা দেয় খুব খারাপ লাগে। যখন ওরা সুস্থ থাকে পুরো হাসপাতাল খুশিতে ভরে যায়। ওরা আমাদের আনন্দের উপলক্ষ্য।

একসঙ্গে জন্মের পর বেঁচে আছে এমন রেকর্ড রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নাদিয়া সুলেমানের ৮ সন্তানের। ২০০৯ সালে জন্ম নেয়া ৮ ভাইবোনের বয়স এখন ১২ বছর।