তিস্তা সেচসহ ১০ প্রকল্প অনুমোদন

তিস্তাসেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার সম্প্রসারণ ও পুনর্বাসনসহ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) প্রায় ১১ হাজার ৯০১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১০টি প্রকল্পের অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৮ হাজার ৯৯২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ ২ হাজার ৯৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৮০৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

আজ মঙ্গলবার (৪ মে) প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়।

তিস্তাসেচ প্রকল্পের মোট ব্যয় ১ হাজার ৪৫২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে এক লাখের বেশি হেক্টর জমি সেচ সুবিধার আওতায় আসবে। ফলে বছরে অতিরিক্ত প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন বাড়বে। একইসঙ্গে অন্যান্য খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়বে ৫ লাখ মেট্রিক টনের বেশি। যার বর্তমান বাজারমূল্য এক হাজার কোটি টাকা। এর পাশাপাশি ৮৬ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে চলতি সময় থেকে ২০২৪ সালের জুন মেয়াদ পযর্ন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পটি নীলফামরীর সদর, সৈয়দপুর, কিশোরগঞ্জ, ডিমলা ও জলঢাকা, দিনাজপুরের পার্বতীপুর, খানসামা ও চিরিবন্দর এবং রংপুরের গঙ্গাচড়া, সদর, তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জে বাস্তবায়িত হবে। তিস্তাসেচ প্রকল্প এলাকার সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় সেচের আওতা বাড়বে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অধিকতর উন্নীতকরণ, পরিবেশ তথা জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও প্রকল্প এলাকায় বসবাসরত ৩০ লাখ জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে।

প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ৭৭১ কিলোমিটার খাল ও সেচ কাঠামো শক্তিশালীকরণ, ৭২ কিলোমিটার সেচ পাইপ স্থাপন, ১ হাজার ৮৫টি সেচ কাঠামো নির্মাণ ও মেরামত করা হবে। এছাড়া ২৭টি কালভার্ট, চারটি সেতু, ৬০টি নিকাশ কাঠামো, ২০টি রেগুলেটর নির্মাণ ও ৬টি রেগুলেটর মেরামত করা হবে। এর পাশাপাশি ২৭০ হেক্টর জলাশয় পুনঃখনন, সাড়ে ৯ কিলোমিটার পরিদর্শন রাস্তা ও ফুটপাত স্লাব ও ৬৮ কিলোমিটার পরিদর্শন রাস্তা মেরামত করা হবে।

অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হচ্ছেঃ- ডাক, টেলিযোগাযোগে ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে টেলিযোগাযোগে নেটওয়ার্ক স্থাপন (১ম পর্যায়) প্রকল্প, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সাইনবোর্ড-মোড়েলগঞ্জ রায়েন্দা-শরণখোলা-বগী সড়কের (আর-৭৭৩) ১৭তম কিলোমিটারে পানগুছি নদীর ওপর পানগুছি সেতু নির্মাণ প্রকল্প, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম (২য় পর্যায়) প্রকল্প, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্প, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘রাঙামাটির কারিগরপাড়া থেকে বিলাইছড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প এবং কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুরের গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বাপবিবোর বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ) প্রকল্প।