ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে পার্লামেন্টে আইরিশ এমপিরা

ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে আয়ারল্যান্ডের বিরোধীদল শিনফেন সংশোধনী প্রস্তাব এনেছে পার্লামেন্টে। এটি পাস হলে বহিষ্কার হবেন ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে ইসরাইলের ওপর।

বিশ্বে শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে আয়ারল্যান্ডের রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে যে কোনো দেশের যে কোনো ক্রান্তিলগ্নে আইরিশরা তাদের সৌহার্দের হাত বাড়িয়ে দেন সবসময়। ফিলিস্তিনের ওপর আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ইসরাইলের ভূমি দখল থেকে হামলা সবকিছুরই আয়ারল্যান্ড প্রতিবাদ করে আসছে।

সবশেষ ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বাহিনী ১১দিনে যে বর্বর হামলা চালিয়েছে তার প্রতিবাদ জানিয়ে আইরিশ পার্লামেন্টে বিরোধীদল শিনফেন একটি নিন্দা প্রস্তাব এনেছে। আর তাতে সমর্থন দিয়েছে আইরিশ সরকার। পাশাপাশি একটি সংশোধনীর প্রস্তাবও আনা হয়। এটি পাস হলে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত বহিস্কারসহ নিষেধাজ্ঞা থাকবে দেশটির বিভিন্ন ক্ষেত্রে। এরমধ্যেই দেশটির বিভিন্ন কাউন্টিতে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে আইরিশদের সঙ্গে অংশ নেন অনেক বাংলাদেশিও।

আইরিশ পার্লামেন্টে ইসরায়েলের বিপক্ষে জোরালো ভূমিকা নেওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।

সংসদ চলাকালে অনেক সংসদ সদস্য ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠার পক্ষে ফিলিস্তিনের পতাকা সংবলিত মাস্ক পরিধান করেন।

আইরিশ পার্লামেন্টে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যেভাবে প্রতিবাদ হয়েছে, পৃথিবীর অনেক রাষ্ট্র থেকে যদি এভাবে প্রতিবাদের ঝড় উঠতো তাহলে ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজ আরও এগিয়ে যেত। যার সুফল পেত ফিলিস্তিনের নাগরিকরা, আর সেই শান্তির বার্তা ছড়িয়ে পরতো পুরো বিশ্বে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে এই প্রথম কোনো দেশ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এই পরিভাষা ব্যবহার করেছে। রয়টার্স, আলজাজিরা ও গার্ডিয়ান এই খবর দিয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ মে) আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিমন কোভিনি বলেন, বিরোধীদল সিন ফেইন এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করছে। এটির মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিন নিয়ে আয়ারল্যান্ডজুড়ে গভীর অনুভূতির পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।

মধ্য-ডানপন্থী ফিন গায়েল পার্টির নেতা সিমন বলেন, ইসরায়েলের অবৈধ বসতি স্থাপনের মাত্রা, গতি ও কৌশলের ধরন এবং এর পেছনের উদ্দেশ্য আমাদের এই সিদ্ধান্তে নিয়ে এসেছে যে, সেখানে যা ঘটছে, তা নিয়ে আমাদের সৎ থাকতে হবে। এর মধ্য দিয়ে ইসরায়েল মূলত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডকে একীভূত করে নিয়েছে।

তিনি বলেন, এটি এমন কিছু না, যা আমি হালকাভাবে বলছি। ইউরোপের প্রথম কোনো দেশ হিসেবে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি। ইসরায়েলি পদক্ষেপের উদ্দেশ্য ও তার প্রভাব নিয়ে আমাদের গভীর উদ্বেগেরই প্রতিফলন এই প্রস্তাব।

১৯৬৭ সালের অধিকৃত ভূমিতে ইসরায়েলি বসতিকে অবৈধ হিসেবে দেখছে অধিকাংশ দেশ। ফিলিস্তিনে শান্তি স্থাপনের যা প্রধান অন্তরায়। প্রস্তাব উত্থাপনের সময় পার্লামেন্টের অনেক সদস্যকে ইসরায়েলি পতাকা ও কুফিয়ার আদলে ফেস মাস্ক পরতে দেখা গেছে।

গত অর্ধশত বছর ধরে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড অব্যাহত দখল করলেও সম্প্রতি তা একীভূতকরণ ও নিজেদের বলে দাবি করে আসছে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।