এএসপি পরিচয়ে প্রেম, বিয়ের পর জানা গেল বিক্রি করেন বাদাম

বগুড়া সদরের পলাশবাড়ী গ্রামে পুলিশের এএসপি পরিচয়ে আবদুল আলিম (৩২) নামে এক প্রতারকের বিরুদ্ধে কলেজছাত্রীকে (১৭) বিয়ের ঘটনা ঘটেছে। এরপর জানা গেল সে বিক্রি করেন বাদাম।

বৃহস্পতিবার রাতে সদর থানায় আলিমের বিরুদ্ধে ছাত্রীর বাবা ধর্ষণ মামলা করলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা ও আদালতে জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য দিয়েছেন।

এজাহার সূত্র জানায়, আবদুল আলিম গাজীপুর জেলা সদরের কামারজুরী গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে। মোবাইল ফোনে রং-নম্বর থেকে তার সঙ্গে ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রীর পরিচয় হয়। পেশায় বাদাম বিক্রেতা আলিম নিজেকে ঢাকার মোহাম্মদপুরের মোল্লাপাড়ার মৃত শফিকুল ইসলামের ছেলে ও রংপুরে কর্মরত পুলিশের এএসপি রাসেল মিয়া বলে পরিচয় দেয়। ঢাকায় চারতলা বাড়ি ও পরিবারের সদস্যরা কোটিপতি- এসব বলে সে ওই ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।

এছাড়া তাকে বিশ্বাস করানোর জন্য একদিন পুলিশের পোশাকে কলেজে এসেছিল। ছাত্রীকে আগ্নেয়াস্ত্রও দেখায়। এতে বিশ্বাস করে ওই ছাত্রী আলিমের প্রেমে পড়ে যায় এবং একপর্যায়ে বিয়েতে রাজি হয়। গত ১৮ জুন ভুয়া পরিচয়ে প্রতারক আলিম ও সাড়ে তিন লাখ টাকা মোহরানায় ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক ছাত্রীকে বিয়ে করে। এরপর গত সাত দিন ছাত্রীর বাপের বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে মেলামেশা করে। সে বৃহস্পতিবার বিকালে ছাত্রীকে বাপের বাড়ি থেকে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এতে ছাত্রীর স্বজন ও এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। তখন তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন সে একজন প্রতারক এবং বাদাম বিক্রেতা।

পুলিশ জানায়, আলীম তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে জানান তিনি রংপুরের সৈয়দপুর নামে এলাকায় একটি পুলিশ ফাড়িতে কর্মরত আছেন। কিন্তু তার কথাবার্তায় অসংলগ্নতা পেলে সন্দেহ করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরবর্তীতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে নিজের বাদাম বিক্রির পেশার কথা স্বীকার করেন আলীম। এও জানান, তিনি পুলিশ নন; তবে সোর্স হিসেবে কাজ করেন।

সদর থানার ওসি সেলিম রেজা ও ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রতারণা ও ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী শুক্রবার বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে- ছাত্রীকে কৌশলে নিয়ে পাচার বা অন্য কোনো অপরাধে ব্যবহার করার উদ্দেশ্য ছিল তার।