পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানের পদ হারালো বাংলাদেশ

করোনা সংক্রমণ রোধে ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। পরে কারখানা মালিকদের অনুরোধে আগামীকাল রবিবার (১ আগস্ট) থেকে রপ্তানিমুখী সব শিল্পকারখানা খোলা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

নতুন খবর হচ্ছে, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডাব্লিওটিও)পোশাক রপ্তানি ইনডেক্সে বলা হয়েছে, বিশ্বে দ্বিতীয় গার্মেন্ট রপ্তানিকারকের পদ হারিয়েছে বাংলাদেশ। রপ্তানি তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে ভিয়েতনাম।

গত শুক্রবার (৩০ জুলাই) প্রকাশিত বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডাব্লিওটিও)পোশাক রপ্তানি ইনডেক্সে এই তথ্য দেয়া হয়েছে।

পরিসংখানে বলা হয়, ২০২০ সালে বিশ্বে ভিয়েতনামের পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৬.৪০ শতাংশ। যা ২০১৯ সালে ছিল ৬.২০ শতাংশ। একই সময়ে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ছিল ৬.৩০ শতাংশ। ২০১৯ সালে ছিল ৬.৮০ শতাংশ। এই হিসাবে ভিয়েতনামের কাছে দশমিক ১০ পয়েন্ট হারিয়ে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিতে তৃতীয় হয়ে গেছে।

তবে পোশাক রপ্তানিতে চীন এখনো তার নিজের প্রথম অবস্থান ধরে রেখেছে। যদিও পোশাক রপ্তানিতে চীনের বৈশ্বিক অবস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২০ সালে বিশ্বের মোট পোশাক রপ্তানির ৩১.৬৬ শতাংশ হলো চীনের। যা ২০১৯ সালে ছিল ৩০.৮০ শতাংশ। ভারত পোশাক রপ্তানিতে পঞ্চম অবস্থান থেকে নেমে ৬ষ্ঠ হয়েছে। তুরস্ক ৬ষ্ট অবস্থান থেকে ৫ম অবস্থানে উঠে এসছে।

বৈশ্বিক পোশাক বাজারের শেয়ারের দিক থেকেও বাংলাদেশ পিছিয়েছে ১৫ শতাংশ। অন্যদিকে ভিয়েতনামের বৈশ্বিক শেয়ার কমেছে ৭ শতাংশ। ২০২০ সালে বাংলাদেশ থেকে পোশাক রপ্তানি করেছিল২৮ বিলিয়ণ ডলারের অন্যদিকে ভিয়েতনাম পোশাক রপ্তানি করেছ ২৯ বিলিয়ণ ডলারের।

এ বিষয়ে বিকেএমএইএর সহ সভাপতি মোহম্মদ হাতেম বলেন, করোনার কারণে বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্প নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে গিয়েছে। করোনার প্রথম ঢেউ বিয়েতনামকে তেমনভাবে স্পর্শ করেনি। তারা এই সুযোগে তাদের রপ্তানি বৃদ্ধি করেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের পোশাক শিল্প অনেকটা চীন নীর্ভর। করোনার করণে চীন থেকে বিশেষ করে ডাইং সামগ্রী আসতে দেরি হয়েছে। শিপিং করতে দেরি হয়েছে। কারখানা বন্ধ ছিল। প্রধান বাজার ইউরোপ ও আমেরিকায় গার্মেন্ট বিক্রি কমে গিয়েছিল। তারমধ্যেও আমরা কিছুটা উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছি। করোনা পরিস্থিতি সাভাকিব হয়ে এলে আবারো গার্মেন্ট এগিয়ে যাবে।

ভিয়েতনামে প্রধান রপ্তানি তাদের কৃষিজাত পণ্য। তারা বছরে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে। ভিয়েতনামে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,করোনাকালীন তাদের অর্থনীতিকে গতীশীল রেখেছে রপ্তানি ও সরকারি বিনিয়োগ। যার ফলে করোনায় যেভাবে তাদের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কথা ছিল সেভাবে হয়নি। ২০২১ সালের প্রথম কোয়ার্টারে তাদের জিডিপি গ্রোথ হয়েছে ৫.১ শতাংশ। তাদের গ্রোথের পিছনে কাজ করেছে আন্তর্জাতিক মানের সেবা দেওয়ার সক্ষমতা। বড় বেসরকারি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান ও তাদের বড় ধরনের বিনিয়োগের কারণে। এই সময়ে ভিয়েতনাম দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতিও ৩.৬ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখতে সক্ষম হয়েছে।