দুই ভাই। দু’জনের সম্পর্কে ভালোবাসার যতটা না বহিঃপ্রকাশ, তার থেকে অনেক বেশি দৃশ্যমান ঝগড়া-ঝাটি, খুনসুটি, পরস্পরের প্রতি অভিযোগ আর খেলনাপাতির দখলদারিত্ব নিয়ে মৌন যুদ্ধ! তবে আছে মুদ্রার উল্টা পিঠও।
নতুন খবর হচ্ছে, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বড়ভাইকে বাঁচাতে নিজের কিডনি দিলেন আপন ছোটভাই। সফল অস্ত্রোপচার শেষে তারা দুই ভাই বর্তমানে ঢাকার কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ইতোমধ্যে ভাইয়ের জন্য ভাইয়ের এমন দৃষ্টান্ত স্থাপনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
জানা যায়, উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ভালিশ্রী গ্রামের মরহুম জহির আলীর তিন পুত্রসন্তান রয়েছে। এর মধ্যে বড়ছেলে যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। দ্বিতীয় ছেলে কোরআনের হাফেজ রুহুল আমিন পরিবারের কাজকর্ম করতেন। আর ছোট ছেলে শোয়েব আহমদ সিলেটের মদন মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী।
পরিবারের সদস্যরা জানান, গত বছর হাফেজ রুহুল আমিনের হঠাৎ করে বুকের মধ্যে ব্যথা অনুভব হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কিডনিজনিত সমস্যা ধরা পড়ে। পরবর্তীতে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়ে গত ৭ মাস ধরে ঢাকার কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
চিকিৎসকরা তার দুটি কিডনিই বিকল হয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে দ্রুত রুহুল আমিনকে কিডনি প্রতিস্থাপন করার কথা বলেন। এমন দুঃসংবাদে হতাশায় পড়ে পরিবারটি। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আপন ছোটভাই শোয়েব আহমদ বড়ভাইকে বাঁচাতে পাশে দাঁড়ান। স্বেচ্ছায় কিডনি দেওয়ার কথা জানান শোয়েব।
গত বুধবার পরিবারের সবার মতামতে ঢাকার কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে তাদের অস্ত্রোপচার করা হয়। ওই দিন বিকাল ৩টার দিকে তাদের অস্ত্রোপচার শুরু হয়। চার ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের পর বর্তমানে তারা দুই ভাই সুস্থ রয়েছেন।