জাতিসংঘে বক্তব্য রাখার সুযোগ চায় তালেবান সরকার

এবার বিশ্বের সামনে নিজেদের অবস্থান ও কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরতে চায় আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তালেবান। আর এই কাজের জন্য তারা বেছে নিতে চাইছে নিউইয়র্কে চলমান জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনকে। এই অধিবেশনে অংশ নিয়ে বিশ্ব নেতাদের সামনে বক্তব্য দিতে চায় আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন এই গোষ্ঠী। চলতি সপ্তাহেই সেখানে অংশ নেওয়ার আগ্রহ জানিয়েছে তারা।

আজ বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। গত সোমবার আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি জাতিসংঘে পাঠানো এক চিঠিতে এই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তালেবানের অনুরোধের পর জাতিসংঘ বিষয়টি বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবান জাতিসংঘে কথা বলার জন্য এরই মধ্যে তাদের মুখপাত্র সুহাইল শাহীনকে মনোনীত করেছে। যিনি দোহায় অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনায়ও তালেবানের একজন মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেছেন। তালেবান বলছে, আফগানিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত আশরাফ ঘানি সরকারের দূত এখন জাতিসংঘে দেশটির প্রতিনিধিত্ব করছে না।

এদিকে জাতিসংঘের এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, উচ্চ পর্যায়ের ওই আলোচনায় অংশ নেওয়ার অনুরোধটি জাতিসংঘের ক্রেডেনশিয়াল কমিটি বিবেচনা করছে। নয় সদস্যের ওই কমিটির অন্যতম সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া।

তবে, আগামী সোমবার সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শেষ হওয়ার আগে সেখানে তালেবানের অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কারণ, নিয়মানুযায়ী অধিবেশন শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত জাতিসংঘে আফগানিস্তানের দূত হিসেবে গোলাম ইসাকজাই বহাল থাকবেন। তিনি ২৭ সেপ্টেম্বর সভার শেষ দিনে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে তালেবান বলছে, ‘তিনি আর আফগানিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করছেন না।’ তারা আরও জানিয়েছে, বিশ্বের অনেক দেশ এখন সাবেক প্রেসিডেন্ট ঘানিকে আফগানিস্তানের নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না।

তালেবান গত মাসের ১৫ তারিখ কাবুল দখলের জন্য রাজধানীতে প্রবেশ করলে আশরাফ ঘানি তড়িঘড়ি করে দেশত্যাগ করেন। এরপর থেকে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় নেন। এর আগে ১৯৯৬ সালে শেষবার যখন তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছিলে তখনো তারা জাতিসংঘে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে সরিয়ে দিয়েছিল।

গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘে কাতার বিশ্বনেতাদের তালেবানের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার আহ্বান জানায়। কাতারের শাসক শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বলেন, তালেবানকে বয়কট করলে শুধু রাজনীতিতে মেরুকরণ ও প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে। এর চেয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া ফলপ্রসূ হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।