দুই শ কেজি স্বর্ণ দিয়ে তৈরি সর্ববৃহৎ কোরআনের কপি দেখা যাবে পাকিস্তান প্যাভিলিয়নে

আল কোরআন মানব জাতির জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ সংবিধান। প্রত্যেক নবী ও রাসূলকে আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির হিদায়াতের জন্য কিতাব দান করেছেন। সে ধারায় সর্বশেষ নবী মোহাম্মাদ (সা.)-কে দান করেছেন আল-কোরআন।

নতুন খবর হচ্ছে, আগামী অক্টোবরে শুরু হতে যাওয়া এক্সপো ২০২০ দুবাই প্রদর্শনীতে থাকছে দুই শ কেজি স্বর্ণ ও দুই হাজার কেজি অ্যালুমিনিয়ামে তৈরি বিশ্বের সর্ববৃহৎ কোরআনের কপি। পাকিস্তানি শিল্পী শহিদ রাসাম ও চার শ শিক্ষার্থীর টিম ঐতিহাসিক এ শৈল্পিক কাজের আঞ্জাম দিয়েছে।

রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) স্বর্ণের তৈরি সর্ববৃহৎ কোরআন নিয়ে পাকিস্তান অ্যাসোসিয়েশন দুবাই (পিএডি) এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। পিএডি-এর প্রধান ড. ফয়সাল ইকরাম, দুবাইভিত্তিক উদ্যোক্তা ইরফান মুস্তফা, শিল্পী শহিদ রাসামসহ অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় করপোরেট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

খবরে জানা যায়, অ্যালুমিনিয়াম ও স্বর্ণের প্রলেপ দিয়ে ক্যানভাসে কোরআনের সর্ববৃহৎ কপি খোদাই করা হয়। সাধারণত কাগজ, কাপড় বা চামড়ার ওপর পবিত্র কোরআন খোদাই করা হয়। তাই ইসলামের ১৪ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম অ্যালুমিনিয়ামে কোরআন খোদাই করা হয়।

শিল্পী রাসাম জানান, বিশ্বের সবচেয়ে বড় খোদাই করা পবিত্র কোরআনের প্রকল্পটি একটি অনন্য প্রকল্প। ফ্রেম ছাড়া পবিত্র কোরআনের কপিটির দৈর্ঘ্য ৮.৫ ফুট এবং প্রস্থ ৬.৫ ফুট। এর মধ্যে ৮০ হাজার শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। প্রতি পৃষ্ঠায় ১৫০ শব্দ থাকবে। আর মোট ৫৫০ পৃষ্ঠা থাকবে। এতে দুই শ কেজি স্বর্ণ ও দুই হাজার কেজি অ্যালুমিনিয়ান ব্যবহৃত হয়।

শিল্পী রাসাম করাচির চারুকলা প্রতিষ্ঠান দ্য আর্টস কাউন্সিল ইনস্টিটিউট অব আর্টস অ্যান্ড ক্রাফটস-এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সম্পূর্ণ ভিন্নতর নতুন এ কর্ম উপহার দেওয়ায় প্রশংসায় ভাসছেন এ শিল্পী। নানারকম সৃজনশীল শৈল্পিক কর্মের মাধ্যমে সবাইকে তাক লাগিয়ে আসছেন তিনি।

পাকিস্তানি এ শিল্পী আরো জানান, তিনি সব সময় চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসেন। আর তাই সর্বদা নিত্য-নতুন বিষয় নিয়ে কাজ করেন। চার বছর আগে এ প্রকল্পটি তিনি শুরু করেন। ৫৫০ ক্যানভাসে পবিত্র কোরআন শেষ করার কাজটি এখনও চলমান আছে। প্রাকৃতিক মূল্যবান পাথর ও অ্যালুমিনিয়ামে স্বর্ণের প্রলেপ দেওয়া পবিত্র কোরআনের কপিটি আগামী এক হাজার বছর স্থায়ী হবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, পবিত্র কোরআনের অনেক অধ্যায় শেষ হলেও এক্সপো ২০২০-এর সময়ে শুধুমাত্র একটি অধ্যায় প্রদর্শনে থাকবে। পাঁচ পৃষ্ঠায় লেখা সুরা আর রহমান অধ্যায়টি প্রদর্শনীর পাকিস্তান প্যাভিলিয়ন কিংবা আলোচনাসাপেক্ষে অন্য কোনো সাইটে দেখা যাবে।

প্রথমদিকে রাসাম নিজেই এ বিশাল কাজ শুরু করেন। কিন্তু প্রকল্পের কাজ শেষ করতে আরো দুই শ শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেন। প্রকল্পের একটি অংশ এবারের দুবাই এক্সপো ২০২০-এর প্রদর্শনীতে থাকবে। ২০২৫ সালের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করতে তারা কাজ করে যাচ্ছে।