মুসলিম বন্দীর ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম গ্রহণ করলেন কারারক্ষী

ইসলাম শান্তির ধর্ম’ কথাটিতে বিশ্বাসের দাবি, আখিরাতে নাজাতের যে পথ ইসলাম দেখায় সেই পথের পথিক হওয়া।

নতুন খবর হচ্ছে, বন্দীদের ওপর অমানুষিক নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত গুয়ান্তানামো বে কারাগারের প্রহরী ছিলেন স্টিভ উড। দায়িত্ব পালনকালে মুসলিম বন্দীদের আচরণে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন। বিশেষত মৌরতানিয়ার একজন মুসলিমের জীবনাচার তাঁর অন্তরে বেশ প্রভাব বিস্তার করে বলে এক সাক্ষাতকারে তিনি জানান।

সম্প্রতি আল জাজিরা মুবাশিরে প্রকাশিত একটি সাক্ষাতকারে জানা যায়, ইসলাম গ্রহণে উড মার্কিন সৈন্যবাহিনীর পদ থেকে অব্যাহতি নেন। গুয়ান্তানামোতে বন্দী থাকা মৌরতানিয়ার অধিবাসী মুহাম্মদ ওয়ালদ সালাহির সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। সেখানকার বন্দীদের মাধ্যমে মুসলিমদের জীবনাচার সম্পর্কে জানতে পারেন।

সাক্ষাতকারে স্টিভ উড বলেন, ‘ওয়ালাদ সালাহির সঙ্গে সাক্ষাতের পর তাঁর জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। তিনি ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেন এবং ঈমানের স্বাদ আহরণ করেন।

বিংশ শতাব্দির কুখ্যাত গুয়ান্তানামো কারাগারে আফগানিস্তান থেকে আগত বন্দীদের প্রহরী হিসেবে উড দায়িত্ব পালন করতেন। এ সময় মুসলিম বন্দী ওয়ালাদ সালাহির উদার ধর্মীয় মনোভাব ও সুন্দর আচার-ব্যবহারে সম্পর্কে জানতে পারেন। এমনকি মুসলিমদের সঙ্গে রূঢ় ব্যবহারের পরও ওয়ালাদ অন্যান্য আমেরিকান বন্দীদের সঙ্গে অত্যন্ত ভালোবাসাপূর্ণ আচরণ করেন, যা অন্যদের অন্তরে বেশ রেখাপাত করে।

উড বলেন, ‘কারাপ্রকোষ্ঠের ভেতর ওয়ালাদ সালাহিকে অন্যদের চেয়ে ভিন্ন হিসেবে আবিষ্কার করি। কারাগারের অভ্যন্তরে কঠিন নির্যাতনের মুখোমুখী হয়েও তিনি ছিলেন জীবনের প্রতি খুবই আশাবাদী। ইতিবাচক মনোভাব তাঁর জীবনযাপনকে আগের চেয়ে সুন্দর করে তুলে। বন্দীদের প্রতি চরম দুর্ব্যবহারের পরও কারো প্রতি তাঁর বিদ্বেষ ছিল না।’

উড আরো বলেন, ‘গুয়ান্তানামোর বন্দীশালা থেকে বের হয়েও ওয়ালাদ সালাহির মনে কারারক্ষীদের প্রতি হিংসা বা ঘৃণা তৈরি হয়নি। ইসলামের শিক্ষা নিজের আচার-ব্যবহারে দৃঢ়ভাবে পালন করতেন। তাঁর সুন্দর ব্যবহার সবার মনে গভীর রেখাপাত করে।

ইসলাম গ্রহণের স্টিভ উড দীর্ঘকাল তাঁর পরিবারের এ খবর গোপন রাখেন। বিশেষত ২০০০ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পশ্চিমা দেশগুলোতে ইসলাম ও মুসলিমদের ব্যাপারে তীব্র ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ায় মুসলিমদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অনিশ্চত হয়ে পড়ে।

সূত্র : আল জাজিরা মুবাশির